- সারাদেশ
- জনসভায় গাড়ি নিয়ে নামমাত্র ভাড়া, তাতেও ওসির থাবা
জনসভায় গাড়ি নিয়ে নামমাত্র ভাড়া, তাতেও ওসির থাবা
প্রতিবাদে চট্টগ্রামসহ তিন জেলায় পরিবহন ধর্মঘট

কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের জনসভার জন্য চট্টগ্রাম থেকে নির্বিচারে গাড়ি রিকুইজিশন করা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। গাড়ি ভাড়া নিয়ে নামমাত্র জ্বালানি খরচ দেওয়া হয়। তবে সেই টাকায়ও ভাগ বসিয়েছেন কক্সবাজারের ঈদগাহ থানার ওসি গোলাম কবির। তাই পরিবহন ধর্মঘট ডেকে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয় চট্টগ্রাম উত্তর এবং দুই পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির সড়কগুলোতে। এতে এসব এলাকার যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরে চট্টগ্রামের ডিআইজি আনোয়ার হোসেনের অনুরোধে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন পরিবহন মালিকরা। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। ধর্মঘট চলাকালে তিন জেলার ১৬টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
গত বুধবার কক্সবাজারের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে জনসভার আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগ। জনসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মনজুর আলম মঞ্জু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, চট্টগ্রামে কোনো কর্মসূচিতে গাড়ির প্রয়োজন থাকলে, তাঁরা আপত্তি করেন না। তাঁদের প্রশ্ন হলো- কক্সবাজারে জনসভা হচ্ছে, গাড়ির প্রয়োজন থাকলে সেখান থেকেই রিকুইজিশন করবেন। সেখানে গাড়ির অভাব নেই। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে কেন কক্সবাজারের জন্য রিকুইজিশন করা হবে?
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে চলাচলে একটি বাসের অন্তত ১০ হাজার টাকার জ্বালানি তেল লাগে। এ ছাড়া পরিবহন শ্রমিকদের বেতন ও খাবার-দাবারের ব্যয়ও রয়েছে। কিন্তু কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার প্রতিটি বাসের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। মালিকরা সেটাও হাসিমুখে নিয়েছেন। কিন্তু জনসভা শেষে ফেরার সময় ঈদগাহ থানার ওসি সেই টাকায় ভাগ বসিয়েছেন। তাই পরিবহন শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল গাড়ি চালানো থেকে বিরত ছিলেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ঈদগাহ থানার ওসি গোলাম কবির সমকালকে বলেন, জনসভার জন্য জেলা পুলিশের গাড়ি রিকুইজিশন নিয়ে কোনোভাবে জড়িত ছিলেন না তাঁরা। তাই গাড়ির টাকায় ভাগ বসানোর বিষয়টিও অবান্তর ও ভিত্তিহীন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার রাতে কক্সবাজার থেকে ফেরার পর বিষয়টি নিয়ে পরিবহন মালিকদের সঙ্গে শ্রমিকদের আলোচনা হয়। এর পর গতকাল সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু হয়। পরিবহন মালিকরা জানিয়েছেন, কেবল উত্তর চট্টগ্রামে চলাচল করা বিভিন্ন রুট থেকে ৫০ থেকে ৬০টি বাস ও ট্রাক রিকুইজিশন করে পুলিশ। এর মধ্যে জনসভার কাজে ব্যবহারের জন্য গত ১ ডিসেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত আট দিন আটকে রাখা হয় আটটি বাস ও ট্রাক।
পরিবহন মালিক নেতা মনজুর আলম জানান, চট্টগ্রাম থেকে রিকুইজিশন করা গাড়ি দিয়ে পুলিশ সদস্যদের পরিবহনের পাশাপাশি কক্সবাজারের চকরিয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ ও মহেশখালীসহ বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জনসভায় আসা-যাওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এর আগে ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জনসভার জন্য প্রায় ৩ হাজার গাড়ি সরবরাহ করা হয় বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন