- সারাদেশ
- ফসলি জমির মাটি কেটে সাবাড়
ফসলি জমির মাটি কেটে সাবাড়
-samakal-6399711b609d3.jpg)
দোহারের মাহমুদপুর ইউনিয়নে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে - সমকাল
দোহারে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি ভেকু দিয়ে কেটে ট্রাক ও মাহেন্দ্রতে করে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে জমির উর্বরাশক্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাস্তা ভেঙে দুর্ভোগে পড়ছে এলাকাবাসী।
সরেজমিন সোমবার ও গতকাল মঙ্গলবার জানা যায়, উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নে প্রভাবশালী একটি চক্র রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় হরিচণ্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কম দামে কিনে পাশের 'পিবিসি' ইটভাটায় বিক্রি করছে। মাটি কাটার সময় প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাহেন্দ্র চলাচল করায় অন্যান্য জমির ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া ধুলায় চারদিক আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। এতে এলাকাবাসী শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানান।
স্থানীয় কৃষক লাল মিয়া জানান, আয়নাল পাটোয়ার, মনির পত্তনদারসহ এলাকার প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে কৃষকদের কাছ থেকে কেনা ফসলি জমির মাটি প্রতি রাতে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং জমি হারাচ্ছে উর্বরতা।
আব্বাস মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে জানান, তাঁদের জমির ওপর দিয়ে জোর করে রাস্তা বানিয়ে মাহেন্দ্রতে মাটি নেওয়া হচ্ছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তাঁদের ক্ষতি করে এই ব্যবসা করা হচ্ছে। পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করে। কেউ জোরালোভাবে বাধা দিলে তাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা হয় বলেও জানান তাঁরা।
বাস্তা গ্রামের আবুল হাসেম ফকিরের ভাষ্য- আইনে উল্লেখ রয়েছে, কোনোভাবেই ফসলি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি এই আইন অমান্য করে মাটি কাটলে দোষীকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধানও রয়েছে। অথচ আইন অমান্য করেই প্রকাশ্যে ফসলি জমির মাটি কাটা চলছে।
আয়নাল পাটোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সবার কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েই তাঁরা এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে এ বিষয়ে বিরক্ত না করতে অনুরোধ জানান তিনি।
এ বিষয়ে মনির পত্তনদারের সঙ্গে তাঁর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করেননি এবং পরে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। খুদে বার্তা দিলেও সাড়া মেলেনি।
দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে অভিযান চালালেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও পুকুর খনন করা হয়েছে। জমির মালিকরা জানিয়েছেন, তাঁরা জমিতে ফসল না করে পুকুর খনন করেছেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তথ্য পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দোহারের ইউএনও মোবাশ্বের আলম জানান, অনুমতি ছাড়া ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে তা ইটভাটায় নেওয়ার সুযোগ নেই। তদন্ত চলছে, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন