চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়রের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১৭ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার। উচ্চ আদালত থেকে জামিনের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

গত ২৮ নভেম্বর চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারির দায়ের করা মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করে করাগারে পাঠিয়েছিলেন আদালত।

বিকেলে কারাগার থেকে বেরিয়ে শাহ আমানতের মাজার জেয়ারত করেন তিনি। সেখান থেকে সুরক্ষা পরিষদের একটি শোভাযাত্রা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কদমতলীর বাসভবনের সামনে যান। তাকে স্বাগত জানাতে বাসভবনের সামনে জড়ো হওয়া মানুষের উদ্দেশ্যে নুরুল আবছার বলেন, 'চট্টগ্রামের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় কারামুক্ত হয়েছি। তাই চট্টগ্রামের মানুষের জন্য শতবার জেলে যেতেও প্রস্তুত। আমাদের আন্দোলন এখন থেকে নবোদ্যমে চলবে।'

তিনি বলেন, মেয়র সাহেব আপিলের ফাঁদ পেতে চট্টগ্রামবাসীর ঘাড়ে ঘর ভাড়ার ওপর গৃহকর স্থায়ীভাবে বসাতে চাচ্ছেন। চট্টগ্রামের মানুষ এসব আপিল আপিল খেলা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। ঘর ভাড়ার ওপর করা করবিধি বাতিল করে সাবেক নিয়মে আয়তনের ভিত্তিতে গৃহকর নিতে হবে। যদি তা না হয়, বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি মানতে মেয়রকে বাধ্য করা হবে।'

সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদে ভবনের ভাড়ার ভিত্তিতে গৃহকর আদায় শুরু করে সিটি করপোরেশন। এর বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন করদাতা সুরক্ষা পরিষদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। আন্দোলনের ফলে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর তা স্থগিত করেছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের শুরুতে বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থগিতাদেশ তুলে নেয় মন্ত্রণালয়। এরপর ভাড়ার ভিত্তিতে বর্ধিত হারে আদায় শুরু করে করপোরেশন। এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আবারও আন্দোলনে নামে করদাতা সুরক্ষা পরিষদ।

ভবনের আয়তনের ভিত্তিতে গৃহকর আদায়ের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় পশ্চিম মাদারবাড়ী এলাকায় উঠান বৈঠক করে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদ। ওই বৈঠকে সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নুরুল আবছার চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেছিলেন, 'আমরা এখানে যারা আছি, তারা ১১ ধরনের ট্যাক্স দিয়ে এই শহরে বসবাস করছি। কারও বাপের ভিটায় বসবাস করছি না।'

গত ২১ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী মোস্তফা কামাল চৌধুরী দুলাল। পরে নুরুল আবছার উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছিলেন। জামিন শেষে গত ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।