- সারাদেশ
- সাতক্ষীরায় এক সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি ৪ শতাধিক শিশু
সাতক্ষীরায় এক সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি ৪ শতাধিক শিশু

কনকনে শীতে শিশুরা ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে - সমকাল
শীতের প্রকোপ বাড়ায় হঠাৎ করেই দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরার হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। কনকনে শীতে শিশুরা ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালে চার শতাধিক শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে পাঁচ শতাধিক শিশু।
জেলার বাকি ছয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৯৫ শিশু। এসব হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে তিন শতাধিক শিশু। হঠাৎ রোগীর চাপ বাড়ায় এবং হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও বেড সংকট থাকায় সেবা পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রোগীর অভিভাবকদের। বেডের অভাবে বারান্দায় ও মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা এক শিশুর বাবা মো. আসাদুল ইসলাম জানান, তার ছেলে গত মঙ্গলবার জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। ওই দিন বিকেলে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানকার চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিয়েছেন। তবে সকালে একবার ডাক্তার আসেন। এ ছাড়া হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ দেওয়া হয়নি। সব বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে।
অপর এক শিশুর মা রমেছা বেগম বলেন, 'আমার মেয়ে সোমবার রাতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। রাতেই তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। আমার মেয়ে এখন আগের চেয়ে সুস্থ। চিকিৎসকরা বলছেন, শীতের কারণে সে অসুস্থ হয়েছে।'
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, জেলার সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালে মোট ১০৭টি বেড রয়েছে। এসব হাসপাতালে চার শিশু বিশেষজ্ঞ ও আটজন অভিজ্ঞ শিশু চিকিৎসক রয়েছেন।
সাতক্ষীরা শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মো. আবুল বাসার বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এই অঞ্চলে প্রায় প্রতি বছরই শীতে ডায়রিয়া বাড়ে।
তিনি বলেন, শিশুদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে। এ সময় শিশুদের বিশুদ্ধ খাবার পানি ও পুষ্টিকর খাদ্য দিতে হবে। অসুস্থ হলে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ হোসাইন বলেন, শীতে রোটাভাইরাস জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে ডায়রিয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত শিশু রোগীও বৃদ্ধি পাছে। তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুদের কোনো ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। শিশু অসুস্থ হয়েছে বুঝতে পারলেই দ্রুত হাসপাতালে আনতে হবে।
সিভিল সার্জন ডা. মো. সবিজুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরা সদর ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে শিশু রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত স্যালাইন ও ওষুধ মজুত আছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের এ বিষয়ে বাড়তি খেয়াল রাখার জন্য বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন