কালভার্ট বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ প্রভাবশালীর

কালাইয়ের করিমপুর-পাঁচগ্রাম সড়কের কালভার্টের মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণ করছেন বদরুজ্জামান আকন্দ সমকাল
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২২:৪৯
জয়পুরহাটের কালাইয়ে মোস্তশা মোড় এলাকায় কালভার্টের মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বদরুজ্জামান আকন্দ নামে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। এতে বর্ষা মৌসুমে পানি সরতে না পারলে জলাবদ্ধতায় হাজার একর জমির ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। কালভার্টের মুখ খোলার ব্যবস্থা না করলে বর্ষা মৌসুমে বিপদে পড়বেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
কালভার্ট বন্ধের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বদরুজ্জামান নিজেও। এ বিষয়ে কয়েকজন কৃষক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালেও কাজ হয়নি। চেয়ারম্যানকে জানানোর পর কাজ দ্রুতগতিতে চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, বর্ষাকালে পাঁচগ্রাম, মাদারপুর, এলতা ও ইমামপুর গ্রামের প্রায় এক হাজার একর জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছিল। এ সমস্যা দূর করতে কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে করিমপুর-পাঁচগ্রাম সড়কে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ কালভার্ট নির্মাণ করে। এরপর থেকে বর্ষার পানি কালভার্ট দিয়ে নেমে যেত হারাবতী খালে।
কয়েক মাস আগে কালভার্টের উত্তর দিকের
মুখ বন্ধ করে পাকা বাড়ি ও সীমানপ্রাচীর
নির্মাণকাজ শুরু করেন বাদাউচ্চ গ্রামের বদরুজ্জামান আকন্দ। এতে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি জমে মাঠের ফসল তলিয়ে নষ্ট হবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। পাঁচগ্রামের জালাল উদ্দিন, জালাইগাড়ির বেলাল হোসেন, এলতার রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয়রা বলছেন, কয়েক দিন
আগে তারা জিন্দারপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়াকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি পদক্ষেপ নেননি। তারা ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেবেন।
যেভাবে কালভার্টের মুখ বন্ধ করেছে, তাতে কোনো দিন এটি দিয়ে পানি যাবে না বলে
দাবি বেগুনগ্রামের কৃষক সাজ্জাদুর রহমানের।
তাঁর ভাষ্য, তিন ফসলি জমিতে ধান, আলুসহ কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা
রয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে প্রায়ই ইউএনও এবং উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছাড়াও প্রশাসনের লোকজন যাতায়াত করেন। তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন।
কালভার্টের মুখ বন্ধ করে বাড়ি নির্মাণের কথা স্বীকার করেছেন বদরুজ্জামান আকন্দ। তিনি বলেন, এখন মাঠে পানি নেই, তাই মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্ষার আগেই খুলে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে বর্ষা মৌসুমে জমে থাকা পানি বাড়ির ভেতর দিয়ে যাবে।
কৃষকরা জানানোর পর বাড়ির মালিককে নিষেধ করেছেন জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, বলার পরও বাড়ির মালিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বিষয়টি ইউএনওকে জানাবেন। এ বিষয়ে ইউএনও মো. আবুল হায়াত বলেন, কেউ অভিযোগ করেনি। খোঁজ নিয়ে কালভার্টের মুখ খোলার ব্যবস্থা করা হবে।