যাদুকাটার শিমুল বাগানে ফাগুনের আগুন

তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগান ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা সমকাল
সুনামগঞ্জ ও তাহিরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ২২:৪৮
নীল দিগন্তে ওই ফুলের আগুন লাগল। চারদিকে রক্তরাঙা লাল ফুল। যাদুকাটার তীরে শুনি ক্ষণে ক্ষণে, কোকিলের কুহুতান, আজি বসন্তে বসন্তের দূত, গাহে আগমনী গান।– কবিতার এই পঙক্তির মতোই যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগানে যেন ফাগুনের আগুন লেগেছে।
বসন্তের আগমনে তাহিরপুরে দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান ফুলে ফুলে ভরে গেছে। সবুজের ডালে ডালে যেন রক্ত লালের নাচন। এ যেন এক স্বর্গরাজ্য। বসন্তের হাওয়া উত্তরের মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড় থেকে দোলা দিচ্ছে শিমুল ফুলের গাছে। সে হাওয়ায় ঝরে পড়ছে রক্তরাঙা শিমুল। শতকোটি শিমুল যেন অগ্রিম বাসন্তী অভিবাদন জানাচ্ছে সবাইকে।
যাদুকাটা পাড়ে শিমুল বাগানের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন পর্যটকরা। সে কারণে প্রতিবছরই বাগানে বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। গাছভর্তি শিমুলের কোনো সৌরভ না থাকলেও মায়ায় নেই কোনো কমতি। দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষ যেন সে মায়ার জালেই বন্দি। অতিথিদের সৌন্দর্যের সাম্রাজ্যে স্বাগত জানান শিমুল বাগানের ফুল বিক্রেতা, ঘোড়াচালক ও ছবিয়ালরা।
জামালগঞ্জ থেকে আসা হোসাইন আহমদ বিপ্লব বললেন, বিশাল বাগানজুড়ে লাল ফুলের ছড়াছড়ি। একসঙ্গে এত শিমুল দেখলে তখন ছন্নছাড়া মানুষও প্রেমিক হয়ে যায়।
নোয়াখালী থেকে সপরিবারে শিমুল বাগানে ঘুরতে এসেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন সবুজ। তিনি জানালেন, ছবিতে যেরকম দেখেছিলেন, বাগানটি এর থেকেও বেশি সুন্দর। এখানে আসতে পেরে ভালো লাগছে।
অপর দর্শনার্থী লিপি আক্তার জানান, ভারতের মেঘালয় পাহাড়, বড়গোপটিলা ও রূপের নদী যাদুকাটার সমন্বয়ে শিমুল বাগানের সৌন্দর্য আরও বেড়ে গেছে। এখন সব গাছেই ফুল ফুটতে শুরু করেছে। প্রতিবছরই তিনি এখানে ঘুরতে আসেন।
এদিকে যাদুকাটা পাড়ের শিমুল বাগানে বসন্তবরণ উৎসবের আয়োজন করেছে জেলা শিল্পকলা একাডেমি। আজ কবিতা, নৃত্য ও গানের মধ্য দিয়ে বসন্তকে বরণ করবেন শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে ১২টি শিল্পীগোষ্ঠী নাচ, ধামাইল, রবীন্দ্র ও বাউলসংগীত পরিবেশনা করবে বলে জানান জেলা কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী।