ঢাকা মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আলোর ফেরিওয়ালার গল্প

আলোর ফেরিওয়ালার গল্প

শাহ আলম সাজু সমকাল

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৪ | ০০:৩৭

জীবিকার দায়, কিংবা সংসারে আয় বাড়াতে নয়, মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি ও নেট দুনিয়ার নেতিবাচক দিক এড়াতে ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়েছেন সাহিত্যিক শাহ আলম সাজু। গ্রামে গ্রামে গিয়ে তিনি সচেতনতামূলক বই বিতরণ করছেন। এক যুগে সখীপুর উপজেলার ১৫টি গ্রাম, ২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দুটি কলেজের শিক্ষার্থী, কিশোর-কিশোরী ও সাধারণ মানুষের হাতে তিনি আড়াই হাজারের বেশি উপহারের বই তুলে দিয়েছেন। উপজেলার পাঁচটি গ্রামে তিনি পাঠাগার স্থাপনে প্রেরণা দিয়েছেন; কয়েকটির উদ্বোধনও করেছেন। ২৫টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনে বই পৌঁছে দেন। উপহারের এসব বইয়ের মধ্যে দেশসেরা লেখকদের পাশাপাশি তাঁর নিজের লেখা গল্প-উপন্যাস রয়েছে।

সম্প্রতি শাহ আলম সাজু ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে ‘বই উপহার’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় চলচিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু প্রধান অতিথি ছিলেন। এ উদ্যোগ এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। এর আগে সাজুর উদ্যোগে ২০ এপ্রিল উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে ‘সখীপুর সাহিত্য সংগঠন’ নামে সামাজিক সংগঠনের উদ্বোধন করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা মামুনুর রশীদ।

গ্রন্থকুঞ্জ পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুর রাজ্জাক সুজন বলেন, পাঠ্যবইয়ের একঘেয়েমি, ইন্টারনেটের অপব্যবহার ও মাদকাসক্তি দূর করতে শাহ আলম সাজু হতেয়া গ্রামে একটি পাঠাগার স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করেন। পরে পাঠাগারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন তিনি। এখন শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের পাঠক পাঠাগারে গিয়ে বই পড়ায় অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। 
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও স্কুলশিক্ষক মাহমুদুল হাসান রিমন সমকালকে বলেন, সাজু প্রগতিশীল লেখক। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে, করোনাকালে তিনি বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে বই বিতরণ করেছেন। অনেক শিক্ষার্থীই এখন ইন্টারনেট অপব্যবহার ও মাদকাসক্তি ছেড়ে বইমুখী হচ্ছে।
সাংবাদিক ও সাহিত্যিক সাজুর বাড়ি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায়। পঁচিশ বছরের লেখালেখিতে তাঁর বই প্রকাশিত হয়েছে ৫৫টি। এর মধ্যে চলতি অমর একুশে বইমেলায় পাঁচটি উপন্যাস প্রকাশ পেয়েছে। ‘পাঁচ গোয়েন্দা দুর্গম পাহাড়ে’ উপন্যাসটি পাঠকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। অনন্যা প্রকাশনী ৫০০ টাকা মূল্যের বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ ইতোমধ্যে পাঠকের হাতে পৌঁছে দিয়েছে।
শাহ আলম সাজু জানান, ইন্টারনেট অপব্যবহার ও মাদকাসক্তির নেশা থেকে শিক্ষার্থী ও যুবসমাজকে ফেরাতে এবং সাধারণ মানুষকে অবসরে বইমুখী করতে উপজেলার প্রতিটি গ্রামে পাঠাগার স্থাপন তাঁর মূল উদ্দেশ্য। শিক্ষা বিস্তারে মননশীলতা বাড়াতে ও সামাজিক অবক্ষয় রোধে গ্রামে গ্রামে গিয়ে সেরা লেখকদের বই এবং তাঁর লেখা গল্প-উপন্যাস বিতরণ আজীবন অব্যাহত থাকবে। সর্বোপরি তিনি সখীপুর উপজেলায় বইমুখী সমাজ গড়তে তরুণ ও শিশু-কিশোরদের বই উপহারের মাধ্যমে শিক্ষা বিস্তারে বিপ্লব ঘটাতে চান। 

আরও পড়ুন

×