বালু তোলার গর্তে ডুবে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যু

ওমর ফারুক মিসবাহ ও কামরুল হাসান মিশকাত
সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪ | ০৪:১৫
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সাঙ্গু নদীতে গোসলে নেমে বালুর গর্তে ডুবে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড নতুনহাটের উত্তর পাশে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মোস্তাক আহমদ সাঙ্গু নদীর নতুনহাটের উত্তর পাশে বালু তুলে গর্ত সৃষ্টি করেছেন। সেই গর্তে ডুবেই আপন দুই ভাই প্রাণ হারিয়েছে।
মৃত দুই শিশু হলো– ৪ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর পুরানগড় কালিনগর এলাকার প্রবাসী আব্দুল মোনাফের ছেলে কামরুল হাসান মিশকাত (১২) এবং ওমর ফারুক মিসবাহ (১০)। মিশকাত বাজালিয়া রাইজিং স্টার স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি এবং মিসবাহ পুরানগড় শাহ সরফুদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শাখার শিক্ষার্থী ছিল।
মিশকাত-মিসবাহর মা ফাতেমা সুলতানা মুক্তা জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার দুপুরে প্রতিবেশী দুই শিশুকে নিয়ে সাঙ্গু নদীতে গোসল করতে যায় তারা। বিকেল হয়ে গেলেও ঘরে না ফেরায় তাদের খোঁজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় এক লোক নদীতে স্যান্ডেল ভাসতে দেখেন। এর পর বালুর গর্তে নেমে প্রথমে মিসবাহর লাশ উদ্ধার করেন তিনি। পরে ওই গর্তে জাল ফেলে মিশকাতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মুক্তা আরও বলেন, ‘আমার স্বামী প্রবাসে থাকে। আমাদের একটি শিশুকন্যা রয়েছে। একসঙ্গে দুই ছেলেকে হারালাম। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব?’
এলাকাবাসী জানান, যুবলীগ নেতা মোস্তাক কয়েক মাস ধরে ড্রেজার দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলছেন। এর ফলে নদীতে বিশালাকৃতির চোরা গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ওই গর্তে ডুবেই মিশকাত ও মিসবাহর মৃত্যু হয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে যুবলীগ নেতা মোস্তাক বলেন, আমি এক সময় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তুলতাম। এখন তা করি না। তাঁর দাবি, তিনি নন; বাজালিয়া ইউনিয়ন এলাকার মোস্তাক নামে আরেক ব্যক্তি বালু তুলছে। এর দায় চাপানো হচ্ছে তাঁর ওপর।
সাতকানিয়া থানার ওসি প্রিটন সরকার জানান, মৃত শিশুদের পরিবার অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ না দিলে থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হবে।
- বিষয় :
- পানিতে ডুবে মৃত্যু