জবি ছাত্রী অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় কুমিল্লায় বিক্ষোভ

কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে মানববন্ধন করা হয়। ছবি: সমকাল
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪ | ১৬:২৬ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ | ১৭:৪০
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়েছে তার জন্মস্থান কুমিল্লায়। আজ শনিবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর এলাকায় সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জোটের আয়োজনে এ মানববন্ধন করা হয়েছে। এতে অবন্তিকাকে নিপড়নকারী সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামসহ অন্যদের দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করা হয়।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরাম, রং তুলি যুব ফাউন্ডেশন, আলো যুব মহিলা কল্যাণ সংস্থা, প্রত্যাবর্তন, তারুণ্যের বাংলাদেশ, নিরাপদ চালক চাই, দেশকল্যাণ সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, ভিবিডি কুমিল্লা, নবাব ফয়জুন্নেছা ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা কলেজ থিয়েটার, ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটার, বাংলা সংস্কৃতি বলয়, ইয়ুথ ফর পারপাস, কুমিল্লা সাইকেলিস্ট ফোরাম, জুনিয়ার ফ্রেন্ডার্স ক্লাবের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।
এ সময় অবন্তিকার সহপাঠী কাউছার আলম ও আবু হেনা বলেন, ‘এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। এ মৃত্যুর জন্য জবি প্রশাসনও দায় এড়াতে পারে না। সব বিষয়ে তদন্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’
আরও বক্তব্য দেন বাংলা সংস্কৃতি বলয়ের মহাসচিব কাজী মাহাতাব সুমন, যুগ্ম মহাসচিব এস এ এম আল মামুন, কবি নজরুল ইন্সটিটিউটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল আমিন, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাডেট ফোরামের সভাপতি শাহ মুজিবুল হক, রং তুলি ফাউন্ডেশনেসর সাইফ বাবু, আবৃত্তি শিল্পী নাবিল হাসান, প্রত্যাবর্তনের আসিফ, আলো যুব মহিলা কল্যাণ সংস্থার মোসা. শিপু আক্তার, দেশ কল্যাণ সংস্থার রাইয়ানুল জান্নাত রোজা, সংগীতশিল্পী কমল চন্দ্র দাস, কুমিল্লা সাইক্লিস্টের আতিক হোসেন, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের এজাহারুল হক মিজানসহ অন্যরা। অবন্তিকার মৃত্যুর নেপথ্যে থাকা জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও মানববন্ধনে জানানো হয়।
এর আগে গত তিন আগে অবন্তিকা ঢাকা থেকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাও এলাকার অরণি নামের বাসায় আসেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় বাসার একটি কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার আগে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার মৃত্যুর জন্য সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর অনৈতিক প্রস্তাব এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের নানা কটুক্তির বিষয় তুলে ধরেন।
অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনমের ভাষ্য, কোথায়ও বিচার পায়নি আমার মেয়ে। কারণে-অকারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২২ সাল থেকে আমার মেয়ের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছিল। তিনি বলেন, ‘জবি প্রশাসনের ডাকে আমি অসুস্থ্য স্বামী নিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে গিয়েছিলাম। বিচার তো পাইনি, উল্টো তারা (জবি প্রশাসন) আমাদের আরও মানসিকভাবে হয়রানি করেছে। কখনো থানায় জিডি ও মামলার হুমকি দেওয়া হতো মেয়েকে। বিচার না পেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আমার মেয়েকে জীবন দিতে হলো।’
এদিকে অবন্তিকার একমাত্র ভাই জাবিদ জাওয়াদ অপুর্ব বলেন, কুমিল্লা সরকারী কলেজ মাঠে জানাজা শেষে শহরতলীর শাসনগাছা এলাকায় বাবার কবরের পাশে আপুকে (অবন্তিকা) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সমাহিত করা হয়েছে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দিতে বলা হয়েছে।
- বিষয় :
- কুমিল্লা
- ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা