হিজলায় পঙ্কজ অনুসারী আ’লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

মেঘনা নদীর তীরে সয়াবিন ক্ষেত থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪ | ১৭:৩৯ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪ | ২১:৪৩
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে অশান্ত বরিশাল-৪ (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) নির্বাচনী এলাকায় আবারও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। শনিবার ভোরে খুন হন হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল মাঝি (৫৫)। বাড়ির কাছে মেঘনার চরে সয়াবিন ক্ষেতে তাঁর রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথের অনুসারী ছিলেন।
ধুলখোলার পালপাড়া গ্রামের জামাল মাঝির পরিবারের অভিযোগ, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জামাল ঢালীর নেতৃত্বে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। জামাল ঢালী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদের অনুসারী। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই এমপির সমর্থকরা দুই বছর ধরে মুখোমুখি অবস্থানে আছেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়েছে। মেঘনা তীরে মাছঘাট ও চরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায় প্রতিদিন দু’পক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে। এক সপ্তাহ আগে জামাল মাঝির ঘরে আগুন দেওয়া হয় ও পরিবারের সদস্যদের কুপিয়েছিল প্রতিপক্ষের লোকজন।
মেঘনা তীরে জামাল মাঝির মাছঘাট রয়েছে। মাছের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চেয়ারম্যান জামাল ঢালীর সঙ্গে তাঁর বিরোধ ছিল। কিছুদিন আগে জামাল মাঝির মাছঘাটের পাশে আরেকটি ঘাট স্থাপন করেন চেয়ারম্যান জামাল।
সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার আলীগঞ্জ বাজারে দুই এমপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর পর পুলিশ ধরপাকড় শুরু করায় পঙ্কজ নাথের সমর্থকরা এলাকা ছেড়ে যায়।
পঙ্কজ নাথ সমকালকে বলেছেন, পুলিশ তাঁর লোকজনকে এলাকাছাড়া করে শাম্মী অনুসারীদের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ সুযোগে শাম্মীর লোকজন তাঁর কর্মী জামাল মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
জামাল মাঝির স্ত্রী আঁখি নুর বলেন, তাঁর স্বামী ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যাওয়ার পর আর ফেরেননি। সকাল ৯টার দিকে চরে সয়াবিন ক্ষেতে তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। আঁখি নুরের অভিযোগ, চেয়ারম্যান জামাল ঢালী, আলম, বাবুলরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
ধুলখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য এনামুল ইসলাম রাসেল বলেন, পুলিশ সকাল ৯টার দিকে সয়াবিন ক্ষেত থেকে জামালের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় সংবাদকর্মী রাজীব তাজ জানান, শনিবার লাশ উদ্ধারের পর পুলিশের ভূমিকা ছিল মারমুখী। মৃতদেহের কাছে যেতে দেয়নি স্বজনকে। সংবাদকর্মীরা গেলে তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান জামাল ঢালি বলেন, কে বা কারা জামাল মাঝিকে হত্যা করে সয়াবিন ক্ষেতে ফেলে রেখেছে। এর আগে জামাল মাঝি নিজেই তার ঘরে আগুন দিয়ে হামলার নাটক করেছিল।
এ ব্যাপারে হিজলা থানার ওসি জুবায়ের হোসেন বলেন, এমপি পঙ্কজ গ্রুপে ছিলেন জামাল মাঝি। তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনা রাজনৈতিক কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
- বিষয় :
- মরদেহ উদ্ধার
- বরিশাল
- হিজলা