- সারাদেশ
- বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ শুরু আজ
পদ্মায় পানি প্রবাহ নেমেছে অর্ধেকে
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ শুরু আজ

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমেছে - সমকাল
পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ আজ ১ জানুয়ারি রোববার শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভারতীয় একটি দল হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এবং বাংলাদেশের একটি দল ফারাক্কা পয়েন্টে পৌঁছে গেছে। তবে এবার প্রবাহিত পানির পরিমাণ অনেক কম। গতকাল শনিবার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল ১ লাখ ৬ কিউসেক, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।
জানা গেছে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণের জন্য ভারত সরকারের দুই সদস্যের প্রতিনিধি বাংলাদেশ এসেছে। তারা হলেন— ভারতীয় জল ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী বসন্ত কুমার ভিঙ্কাটেসন ও সহকারী পরিচালক দীপক কুমার। তারা ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আড়াই হাজার ফিট উজানে যৌথভাবে পানি প্রবাহ পযর্বেক্ষণ করবেন। এর পর আরেকটি নতুন টিম আসবে। এই পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, শনিবার ৩১ ডিসেম্বর পদ্মার নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল ১ লাখ ৬ হাজার কিউসেক। গত বছরের একই সময় একই স্থানে পানির প্রবাহ ছিল প্রায় ডাবল। তাই পদ্মায় পানি প্রবাহ গত বছরের চেয়ে এবার অনেক কম হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।

এদিকে পদ্মায় পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় আশপাশের এলাকার পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-পরিচালক মোশারফ হোসেন সমকালকে বলেন, পানি না পাওয়ায় পদ্মার পশ্চিমপাড়সহ আশপাশের এলাকার আবহাওয়া ও পরিবেশ আস্তে আস্তে পাল্টে যাচ্ছে। দিনের বেলায় প্রচণ্ড গরম আর রাতে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রতি বছর ৫ ফুট করে নিচে নেমে যাচ্ছে। এখন পানির স্তর ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট নিচে রয়েছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর আরো নিচে নেমে যাবে। এভাবে চললে ১০ বছর পর এ অঞ্চলে পানি পাওয়া কঠিন হবে। তা ছাড়া বৃষ্টিপাত না থাকায় বিশুদ্ধ পানির প্রাপ্যতা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতে হায়দরাবাদ হাউসে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেব গৌড়া এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নিজ দেশের পক্ষে ৩০ বছর মেয়াদি পানি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ঐতিহাসিক এই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট ও ভারতের ফারাক্কা পয়েন্টে দুই দেশের পানি বিশেষজ্ঞদের যৌথ দল পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানি বণ্টন হয়ে থাকে।
মন্তব্য করুন