কয়েকদিন আগে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের ২নং সাতনালা ইউনিয়নের রাণীপুর গ্রামের পানা পুকুরে হাচানুর রহমান নামে একজনের মরদেহ পাওয়া যায়। মুহূর্তের এ খবর ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। পুলিশ উদ্ধার কাজ করতে এলে কেউ কেউ তা ফেসবুকে লাইভও করেন। পরে এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় প্রধান আসামিসহ মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দিনাজপুর র‌্যাব-১৩। গ্রেপ্তার হওয়া একজন মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ফেসবুক লাইভ করেছিলেন।

শনিবার চিরিরবন্দর থানায় আসামিদের সোর্পদ করে র‌্যাব-১৩। এর আগে একইদিন বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের আটক করা হয়। গত মঙ্গলবার দুপুরে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার ৫ জন হলেন- উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের দগরবাড়ির মোতালেব হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৮), নশরতপুর বালাপাড়া গ্রামের মৃত মনসুর আলীর ছেলে সবুজ হোসেন (২৭), মাইজার রহমানের ছেলে জাকির হোসেন (২৭), আব্দুর রহমানের ছেলে আকরাম হোসেন (৩০) ও হাবিবুর রহমানে ছেলে মশিউর রহমান লাল (২৫)।

এর আগে বৃহস্পতিবার মামলার প্রধান আসামি উপজেলার রানীপুর ভগুপাড়ার অহেদ আলীর ছেলে সামিউল ইসলামকে (৩০) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

স্থানীয়রা জানায়, আসামিদের মধ্যে আকরাম হোসেন তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডি ‘আবার কথা হবে’ থেকে ঘটনার দিন মরদেহ উদ্ধারের লাইভ দিচ্ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মৃত হাচানুর রহমান রানীপুর ভগুপাড়ার মৃত এজাদ্দীনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন হরেক মাল বিক্রেতা। গত ২৮ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮ টায় জরুরি কাজের কথা বলে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। পরে তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। পরদিন স্থানীয় একটি পানা পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। একইদিনে হাচানুরের মা হাছিনা বানু বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে চিরিরবন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি ছিলেন সামিউল ইসলাম। এই মামলার অন্য আসামির হলেন সামিউলের ভাই ওবাইদুল (৩৫), ভগুপাড়ার রুস্তম আলীর ছেলে শাফিয়ার রহমান (২৫) ও বালাপাড়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে রুবেল (২৭)। মামলায় হাচানুরের পরিবার দাবি করে, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে।

এ বিষয়ে কথা হলে চিরিরবন্দর থানার ওসি বজলুর রশিদ বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের র‌্যাব-১৩ এর দল থানায় সোপর্দ করেছে। পরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।

ওসি আরও বলেন, আসামি আকরাম হোসেন মরদেহ উদ্ধারের সময় আমাদের সাথেও ছিলেন। হয়তো ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যই তিনি এসব করছিলেন। পুলিশ হেফাজতে রেখে আসামিদের ৭ দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।