গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়ির উঠানে গাছের সাথে বেঁধে সুফি বেগম নামে একজনের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার দেবর লিয়াকত মোল্লার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের বাঘঝাপা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধারের পর কাশিয়ানী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এর আগেও লিয়াকত তার তার ভাবীর মাথার চুল কেঁটে দিয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে সালিশে ওই ঘটনার মীমাংসা হয় বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

অগ্নিদগ্ধ ওই নারী কাশিয়ানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লার সাথে তার আপন ভাই আমার দেবর লিয়াকত মোল্লার দীর্ঘ দিন ধরে পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। লিয়াকত মোল্লাও একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। লিয়াকত তার পৈতৃক সম্পত্তির প্রাপ্য অংশ বিক্রি করে অনেক আগেই গ্রাম থেকে চলে গেছেন । তারপরও সে এখনও পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে আসছিল ।এ নিয়ে আমার স্বামী ও দেবরের মধ্যে বিরোধ চলছিল।

ওই নারী আরও বলেন,এই বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে লিয়াকত মোল্লা ও আমার আরেক দেবর আব্দুর রহমানের ছেলে সোহেল আমাদের বাড়িতে আসে। এসময় আমি বাড়িতে একা ছিলাম। তারা আমাকে বসত ঘর থেকে টেনে হিচড়ে বাইরে বের করে আনে। বাড়ির উঠানের পেয়ারা গাছের সাথে আমার হাত-পা বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যায় ।পরে স্থানীয়রা আমার চিৎকার শুনে এগিয়ে এসে। তারা আমাকে উদ্ধার করে কাশিয়ানী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। আগুনে আমার গোটা শরীর পুড়ে গেছে।

ওই নারীর স্বামী ইউসুফ আলী মোল্লা বলেন, ঘটনার সময় আমি বাড়ি ছিলাম না। এর আগেও লিয়াকত মোল্লা আমার স্ত্রীর চুল কেটে দেয়। এটি  স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়। এখন সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি এ ব্যাপারে মামলা করব। তার  পৈতৃক জমি সে বিক্রি করে ফেলেছে। তারপরও সে আমার অংশের জমি চায়। এই নিয়েই সে বিরোধ করে আসছিল।

ভুক্তভোগী নারীর প্রতিবেশী বাঘঝাপা গ্রামের প্রিন্স মোল্রা বলেন, ইউসুফ আলী মোল্লার বাড়িটি অনেকটা ঝোপ জঙ্গলে ঘেরা। ওই বাড়িতে মানুষ ঢুকলে টের পাওয়া যায় না। আগুনের শিখা দেখে আমরা সুফি বেগমকে উদ্ধার করি। জমিজমা নিয়ে তাদের সাথে লিয়াকতের বিরোধ আছে বলে আমরা জানি । ১ বছর আগে লিয়াকত ওই নারী চুল কেটে দেয়। পরে সেই ঘটনার মীমাংসা করা হয়। এ ঘটনার ন্যায় বিচার হওয়া উচিত।

কাশিয়ানী ১০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.আমিনুল ইসলাম বলেছেন, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার পুরো শরীরই পুড়ে গেছে।তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।

কাশিয়ানী থানার ওসি ফিরোজ আলম জানান, ঘটনার পর পর অভিযুক্ত ব্যক্তি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটতে পারে।