ফুটপাতে কেনাকাটা, চা-নাশতা ও ঝালমুড়ির মূল্য পরিশোধ থেকে শুরু করে জুতা পলিসের বিলও এখন দেওয়া যাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। বাংলাদেশ ব্যাংক স্থাপিত 'বাংলা কিউআর'-এ যুক্ত যে কোনো ব্যাংক ও এমএফএস অ্যাকাউন্টধারী অ্যাপ থেকে পণ্য বা সেবার মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। ক্যাশলেস বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ১২শ দোকানে এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এ উদ্যোগ ছড়িয়ে দিতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে ডেপুটি গভর্নরসহ অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যবস্থায় যুক্ত ব্যাংকগুলো হলো ডাচ্‌-বাংলা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, দ্য সিটি, পূবালী, ইউসিবি, ওয়ান, ইস্টার্ন, ব্যাংক এশিয়া ও এবি ব্যাংক।

নগদ লেনদেন কমানোর মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে এমন ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০২০ সালে। প্রস্তুতি শেষে প্রাথমিকভাবে ১০টি ব্যাংক ও তিনটি এমএফএস প্রতিষ্ঠান এ ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য সব ব্যাংক, এমএফএস, পিএসপি, পিএসও এখানে যুক্ত হবে। একটি দোকানে যে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের কিউআর ব্যবস্থা থাকলে অন্যরাও সেখানে পরিশোধ করতে পারবেন। দোকানদার বা গ্রাহক কারও বাড়তি চার্জ লাগবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নগদ অর্থ পরিশোধ ঝুঁকিপূর্ণ। চেকে পরিশোধ সময়সাপেক্ষ ও জটিল।

আবার কার্ডে পরিশোধ করতে ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে অনেক বিনিয়োগ করতে হয়। ফলে ছোট মার্চেন্ট যেমন- ডাব, ঝালমুড়ি, মুচির পক্ষে এ ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। যে কারণে প্রান্তিক পর্যায়ে ডিজিটাল পেমেন্ট প্রসার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নেওয়া সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বজনীন বাংলা কিউআরে অংশগ্রহণকারী যে কোনো ব্যাংক বা এমএফএসে অ্যাকাউন্টধারী গ্রাহক এখান থেকে পরিশোধ করতে পারবেন। কিউআর কোড শুধু একটি প্রিন্টেড ছবি হওয়ায় দোকানদারের অংশগ্রহণের খরচ খুব সামান্য।

গতকাল মতিঝিল ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাতের বিভিন্ন দেকানে কিউআর কোডে পরিশোধের জন্য একটি ছবি সংবলিত ছোট বোর্ড দেওয়া হয়েছে। দু-একজন তাতে পরিশোধও করছেন। এই টাকা গিয়ে জমা হচ্ছে মার্চেন্ট তথা দোকানদারের অ্যাকাউন্টে। পরীক্ষামূলকভাবে বেশ আগ থেকে এ ব্যবস্থায় পরিশোধ নিচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের চা দোকানদার বাবুল। তিনি জানান, এই ব্যাংকে তিনি একটি অ্যাকাউন্ট খুলে এ ব্যবস্থায় পরিশোধ নিচ্ছেন।