ভোলার চরফ্যাসনে স্ত্রী ইয়াছমিনের মৃত্যুর ঘোষণা শুনে হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে গেছেন স্বামী নাঈম হোসেন। আজ রোববার বিকেলে উপজেলার ১০০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। শশীভূষণ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ভোলায় মর্গে পাঠিয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অমিতাভ দে জানান, বিকেলে ইয়াছমিনকে (২৫) মৃত অবস্থায় নিয়ে আসেন নাঈম। তিনি বিষপান করেছেন বলে স্বামী জানান। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি জানানোর পরই নাঈম লাশ ফেলে পালিয়ে যান। ইয়াছমিনের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়।

জরুরি বিভাগের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার জাহিদ হোসেন জানান, নাঈম ভাড়ায় চালিত অ্যাম্বুলেন্সের চালক। নিজের অ্যাম্বুলেন্সে করে স্ত্রীকে তিনি নিয়ে আসেন। পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

শশীভূষণ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সমেদ আলী জানান, ইয়াছমিনের বাবার বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার বাশাইল গ্রামে। শশীভূষণ থানার রসুলপুর ইউনিয়নের শশীভূষণ গ্রামের মৃত ইদ্রিস মাঝি ও স্কুলশিক্ষিকা নাজমা বেগমের ছেলে নাঈমের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়াছমিন। তাঁরা সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। সেখানে থাকাকালে প্রেম হয়। তিন বছর আগে দেশে ফিরে বিয়ে করেন। তাঁদের এক বছরের মেয়ে সন্তান রয়েছে।

ইয়াছমিনের ভাই আল আমীন ও বোন রহিমা বেগম দাবি করেন, বোনের সংসারে কলহ লেগেই ছিল। এর জেরে নাঈম তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, নাঈমের বাবা ইদ্রিস মাঝির মৃত্যুর পর মা নাজমা বেগম আবুল বাশার নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। পরে আবুল বাশার দ্বিতীয় বিয়ে করে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। ইয়াছমিনের মৃত্যুর দিন রোববার নাজমা স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় ছিলেন। শশীভূষণ গ্রামে মা নাজমা ও স্ত্রী ইয়াছমিনকে নিয়ে থাকতেন নাঈম। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ ছিল। তবে রোববার বিষপান বা মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রতিবেশীরা কিছু বলতে পারেননি। ঘটনার পর থেকে বাড়ির সবাই গা-ঢাকা দিয়েছেন।

শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।