উদ্বোধনের বিষয়ে কয়েক দফা শোনা গেলেও এখনও তারিখ চূড়ান্ত না হওয়ায় কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি খাগড়াছড়ির রামগড় ইমিগ্রেশন। যদিও এরই মধ্যে উদ্বোধনের জন্য এই ইমিগ্রেশন স্টেশনটি সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে।

রামগড়ের ইউএনও মমতা আফরিন, পৌর মেয়র রফিকুল আলম কামাল, উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমারসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, পর্যটকসহ সংশ্নিষ্টরা মনে করেন, অনেক সময় অতিবাহিত হলেও রামগড় স্থলবন্দর ও ইমিগ্রেশন চালু হলে বাংলাদেশ-ভারত প্রত্যাশিত লাভবান হবে। বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরা লাগোয়া রামগড় বন্দর চালু হলে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসার পাশাপাশি সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান। ত্রিপুরা থেকে কাঠ, বাঁশ, পাথর, মসলা, ফল, সার, বীজ, গমসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য এই বন্দর দিয়ে সহজে আমদানি করা যাবে। বাংলাদেশ থেকে সহজে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় রপ্তানি করা যাবে প্রসাধন সামগ্রী, সিরামিক, মেলামাইন পণ্য, সিমেন্ট, ইট, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, তামাক জাতীয় পণ্য, শুঁটকিসহ প্রভৃতি। বিকশিত হবে পাহাড়ের অর্থনীতি ও পর্যটন খাত।

রামগড়ের মহামুনি এলাকায় অধিগ্রহণকৃত ১০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে এই ইমিগ্রেশন ও স্থলবন্দর। তবে আরও ১৬ একর জায়গা অধিগ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেক্টিভিটি প্রকল্প-১ এর আওতায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এর জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনিকো লিমিটেডের সঙ্গে ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি হয়। এরপর ওই বছরের ডিসেম্বরে স্থলবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ পরিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় রামগড় ইমিগ্রেশন ও স্থলবন্দর উদ্বোধনের জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়। সে লক্ষ্যে দ্রুত ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণসহ সম্পন্ন করা হয় অন্যান্য প্রস্তুতি। কিন্তু সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতর হওয়ায় এসব স্থাপনা নির্মাণে ভারতের অনাপত্তিপত্র সময়মতো পাওয়া যায়নি। ফলে স্থলবন্দরের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনার নির্মাণকাজ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
সম্প্রতি রামগড় ও সাব্রুম স্থলবন্দর চেক স্টেশন পরিদর্শন করেন ভারত স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আদিত্য মিত্র ও কাস্টমসের প্রধান কমিশনার যোগেন্দ্র গার্গসহ উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় বিজিবির ৪৩ রামগড় জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান এবং পিএসসি ও সাব্রুমের ৯৬ বিএসএফ কমান্ডান্ট কৃষ্ণ কুমার লালও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ইমিগ্রেশন ও স্থলবন্দরের সার্বিক কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
স্থলবন্দরের সুপারেন্টেডেন্ট মাসুম বিল্লাহ বলেন, ইমিগ্রেশন পরিচালনার জন্য রামগড় ইমিগ্রেশন ভবন পুরোপুরি প্রস্তুত। এখন প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১১২ কিলোমিটার দূরত্বের এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে মাত্র তিন ঘণ্টায় ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য ভারতের ত্রিপুরার সাব্রুমে পৌঁছানো যাবে।