স্ত্রীর হত্যা ষড়যন্ত্র থেকে অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন সৌরভ বেপারী নামে এক যুবক। স্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী এবং তাঁর সামনেই দুই প্রেমিক তাঁকে নির্মমভাবে কুপিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। সৌরভের বাড়ি উপজেলার পিঙ্গলাকাঠি গ্রামে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল এটি একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন সৌরভের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার মুসকান। স্বামীকে হত্যা করতে দুই প্রেমিক আবু সাইদ সিয়াম (২০) ও জিহাদ হাসান রাজনকে (১৭) দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। বুধবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম।

গত ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় গৌরনদীর কালনা গ্রামে সড়কের ওপর সৌরভকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কোপানো হয়। এ সময় স্ত্রী মুসকান সঙ্গে ছিলেন। গৌরনদী বন্দরে কেনাকাটা করে ফেরার সময় হামলার শিকার হন সৌরভ।

গৌরনদী থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, সৌরভকে কোপানের সময় স্ত্রী মুসকানের আচরণ ছিল সন্দেহজনক। এ জন্য তদন্তের শুরুতেই তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুরো ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন।

মুসকান জানিয়েছেন, বিয়ের পরও দুই প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখায় স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। তাই স্বামীকে হত্যার জন্য প্রেমিকদের সঙ্গে পরিকল্পনা সাজান। ঘটনার দিন বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ভিটামিন ওষুধের কথা বলে সৌরভকে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ান মুসকান। গৌরনদী বন্দরে কেনাকাটা করার সময় সৌরভ অসুস্থ বোধ করেন।

বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে মুসকান স্বামীকে নিয়ে অটোরিকশায় ওঠেন। এর আগে একটি বিউটি পার্লারে ঢুকে তাঁদের রওনা হওয়ার খবর মোবাইলে দুই প্রেমিককে জানানো হয়। পথে বান্ধবীর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে অটো থেকে নেমে পায়ে হেঁটে রওনা হন তিনি। এ সময় সেখানে আগে থেকে ওত পেতে থাকা প্রেমিক সিয়াম ও রাজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে সৌরভের ওপর হামলা চালায়। সৌরভের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।

মুসকানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে তাঁর দুই প্রেমিককে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে পুলিশ গ্রেপ্তার এবং হামলায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে।