- সারাদেশ
- ঘোষণাতেই আটকে অভয়ারণ্য 'কুহু'
ঘোষণাতেই আটকে অভয়ারণ্য 'কুহু'

কাপাসিয়ার পাকিয়াব এলাকায় 'কুহু' অভয়ারণ্যের ঘোষণা দিয়ে বসানো সাইনবোর্ড - সমকাল
শাল, গজারি, আকাশি, মেহগনি, আম, জাম, কাঁঠালসহ নানা গাছ-গাছালিতে ভরপুর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের পাকিয়াব ও তরুণ এলাকা। সেখানকার পাখি, মাছ ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় ৮০ একর বনভূমিকে কুহু নামে অভয়ারণ্য ঘোষণা করেছিল স্থানীয় প্রশাসন।
উপজেলায় প্রথমবারের মতো এমন উদ্যোগ নেওয়ায় পরিবেশবাদী ও এলাকাবাসীর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিল। তবে এর উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রায় তিন বছর পার হলেও অভয়ারণ্য আলোর মুখ না দেখায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। তবে পদক্ষেপটি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা পাখি, মাছ ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় পাকিয়াব ও তরুণ এলাকার প্রায় ৮০ একর বনভূমিকে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। 'কুহু' নামে অভয়ারণ্যটি এদিন স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি পরিদর্শন করে নামফলক উদ্বোধন করেন।
এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি এলাকার মতো দেখতে গাছগাছালিতে সমৃদ্ধ স্থানটি প্রাকৃতিকভাবে খুবই আকর্ষণীয়। নিভৃত পল্লির বনে নানা জাতের দেশীয় পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে। বনজুড়ে বেশ কয়েকটি টিলা রয়েছে। প্রকৃতিতে সংকটাপন্ন বনরুই, গন্ধগোকুলসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর দেখা মেলে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তরুণ গ্রামের বাসিন্দা মো. ইসমাইল জানান, বিশাল বনের কিছু অংশ প্রভাবশালীরা দখল করতে চেষ্টা চালিয়েছেন। উদ্ভিদ উদ্যান বাস্তবায়ন হলে প্রকৃতি রক্ষা পাবে, এলাকার উন্নয়ন হবে। অভয়ারণ্য ঘোষণা করায় অস্তিত্ব সংকটে থাকা বনটি বাঁচবে বলে আশা করেছিলেন তাঁরা।
পাকিয়াব গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন বলেন, তিন বছর আগে সাইনবোর্ড লাগানোর পর এর উন্নয়নে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দীঘিরকান্দা গ্রামের শেখ নাঈম বলেন, সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি অভয়ারণ্য ঘোষণা করে সাইনবোর্ডের কাছে বৃক্ষরোপণ করলেও উন্নয়ন কিংবা নজরদারি বাড়েনি।
পাকিয়াব, তরুণ, দীঘিরকান্দা ও বড়হর এলাকার বনাঞ্চল রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রয়েছে ঢাকা বন বিভাগের শ্রীপুর রেঞ্জের পাকিয়াব সাব-বনবিট। এর কর্মকর্তা মনিরুল করিম জানান, এ ধরনের কোনো কার্যক্রমের কথা তাঁর জানা নেই।
কড়িহাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি পাখি ও বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য ঘোষণা করে তা বাস্তবায়নে সরকারিভাবে প্রকল্প নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তা অনুমোদন পেলে অভয়ারণ্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
ইউএনও এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান বলেন, এ বনভূমিতে দেশীয় পশুপাখি যেন বিনা বাধায় বসবাস করতে পারে ও বংশবৃদ্ধি করতে পারে, সে জন্য অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। তা বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি বলেন, শিগগিরই সীমানা নির্ধারণ করে চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী করা হবে। বন্যপ্রাণী, পাখি ও মাছ নিরাপদে বংশ বৃদ্ধি করতে পারবে। তবে করোনার কারণে কাজের গতি কিছুটা কম।
মন্তব্য করুন