কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানে প্রতিবন্ধী নারীরা সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। 'চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদে'র সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এ সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা। এ পর্যন্ত অন্তত ৬০ নারী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে অর্থের অভাবসহ নানান প্রতিবন্ধকতায় সুবিধাভোগীদের সংখ্যা বাড়াতে পারছেন না উদ্যোক্তারা।

চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, চা শ্রমিক সন্তান প্রতিবন্ধী উত্তম যাদবের নিজ উদ্যোগে দুই বছর ধরে সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। অনেকে প্রশিক্ষণ শেষে বাসায় কাজ করছেন। কমলগঞ্জ ও কুলাউড়ার ২৪টি বাগানে ৫১৩ জন প্রতিবন্ধী রয়েছেন। তাঁদের জীবনমান উন্নয়নে সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়। ইতোমধ্যে চা বাগানের ৩০ নারী প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। দ্বিতীয় দফায় গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে ৩০ নারীর ৫০ দিনের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। ১০টি সেলাই মেশিনে দুই শিফটে ৩০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

পরিষদের সভাপতি উত্তম যাদব বলেন, চা বাগানের প্রতিবন্ধীরা যাতে ঘরে বসে আয় করতে পারেন, সে জন্য প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থায়নে এ কার্যক্রম চলছে। প্রশিক্ষককে মাসিক ৬-৭ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হয়। অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন সেলাই মেশিন কেনা সম্ভব হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কমলগঞ্জের ইউএনও সিফাত উদ্দিনের মাধ্যমে ৩০ জন প্রতিবন্ধী নারী কম্বল পেয়েছেন। করোনাকালে ৩০ জন প্রতিবন্ধীর জন্য জনপ্রতি এক হাজার টাকার খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। সহায়তা পেলে প্রতি শিফটে ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার আশা উদ্যোক্তাদের।

চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, এ প্রতিষ্ঠান নারী প্রতিবন্ধীদের সমাজের সম্পদ হিসেবে গড়তে চায়। এ জন্য সরকারি উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে প্রতিষ্ঠানটি সমৃদ্ধি লাভ করবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম বলেন, প্রতিবন্ধী নারীরা সংগ্রামী ও ত্যাগী। তাঁদের সাফল্য সমাজের অন্য নারীদের পথ দেখাবে। সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন নারীরা।

ইউএনও সিফাত উদ্দিন বলেন, চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদের প্রতিবন্ধীদের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম প্রশংসনীয়। প্রতিবন্ধী নারীদের উন্নয়নে প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে সচেষ্ট আছেন বলে জানান তিনি।