সাতক্ষীরায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মো. রবিউল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আযম আজ সোমবার দুপুরে এ আদেশ দেন। একই আদেশে বিচারক এ মামলার অপর চার আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।

রবিউল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পূর্ব মেহেদীবাগ মাঠপাড়া এলাকার মো. বিল্লাল গাজীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি রবিউল ইসলাম আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে রবিউল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় রাবেয়ার বাবা মো. রবিউল ইসলামকে ৩ লাখ টাকার মালামাল দেন। এরপরও রবিউল ইসলাম ১ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী রাবেয়া খাতুনকে নির্যাতন করত। পরবর্তীতে রাবেয়া খাতুনের বাবা রবিউলকে ৭০ হাজার টাকা দেন। যৌতুকের বাকি টাকা না পেয়ে ২০১৪ সালের ৬ জুন সন্ধ্যায় নিজ বসতঘরে রাবেয়া খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রবিউল।

এ ঘটনার পরদিন রাবেয়ার বাবা শহীদুল বিশ্বাস বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় জামাতা রবিউল ইসলাম, তার বাবা বিলাল গাজী, মা রোকেয়া বেগম, ভাই হাসান ও বোন আসমা খাতুনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামি আসামি রবিউল ইসলাম ২০১৪ সালের ৮ জুন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শিমুল কুমার বিশ্বাসের কাছে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক তানভির হোসেন ওই বছরের ১৭ নভেম্বর আদালতে এজাহারভুক্ত ৫ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলার নথি ও ১৩ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামি রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে স্ত্রী রাবেয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এমজি আযম তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জহুরুল হায়দার বাবু জানান, এই হত্যা মামলাটি দীর্ঘ আট বছর যাবত চলমান ছিল। সকল সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পর বিচারক আজ অভিযুক্ত রবিউল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। মামলায় অন্য আসামিদের বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।