ফরিদপুরে অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় ইজিবাইকচালক বেলায়েত মোল্লাকে (৪০) হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত করে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরীসহ দুই জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত ওই দুই ব্যাক্তিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানা অনাদায়ে ওই দুই ব্যাক্তিকে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

ফরিদপুরের বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান মঙ্গলবার দুপুরে এ আদেশ দেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুই ব্যাক্তি হলেন- ভাঙ্গার মাঝারদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ্য প্রহরী আলগী ইউনিয়নের সোনাখোলা গ্রামের সেন্টু শেখ (৩৭) ও তার বন্ধু একই গ্রামের লুৎফর হাওলাদার ওরফে কালা (৩৬)।

রায় প্রদানের সময় সেন্টু শেখ আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপর আসামি লুৎফর প্রথমে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে জামিন নিয়ে পলাতক হন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত ইজিবাইকচালক মাঝারদিয়া গ্রামের বেলায়েত মোল্লা ২০১৭ সালের ৬ মে বিকেল ৫টার দিকে চা পান করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাতে আর ফিরে আসেননি। পরদিন ৭ মে তার মরদেহ বাড়ি থেকে আনুমানিত ২০০ মিটার দূরে মুন্নুর বাড়ির পাশে একটি বাঁশ ঝোপের পাশে ডুমুর গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই দিন মৃতের স্ত্রী পাখি বেগম (৩৬) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের আসামি করে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পীযূষ কান্তি হালদার ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর এ হত্যার ঘটনায় সেন্টু, লুৎফর, মো.স্বপন তালুকদার ও মো. কাইয়ুমকে আভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সেন্টু ও লুৎফরের স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে অবৈধ কর্মকাণ্ড দেখে ফেলেন ইজিবাইকচালক বেলায়েত। প্রথমে তারা বেলায়েতকে এ ঘটনা এলাকায় ফাঁস না করার জন্য অনুরোধ জানান। বেলায়েত এ অনুরোধ উপেক্ষা করলে তারা বেলায়েতকে হত্যা করে একটি গামছা দিয়ে ডুমুর গাছের সঙ্গে মরদেহটি ঝুলিয়ে রাখে।

এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী (সহকারি পিপি) গোলাম হোসেন সমকালকে জানান, আদালতে হত্যার দায় সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সেন্টু ও লুৎফরকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর দুই আসামি স্বপন ও কাইয়ুমকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।