পূর্বশত্রুতার জেরে কুমিল্লায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে রিয়াদ হোসেন (২৮) নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার বিকেলে সদর দক্ষিণ উপজেলার বাঙ্গামুড়া গ্রামের মফিজ মিয়ার দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দু'দিন ধরে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত রিয়াদ হোসেনের বাবা আলেক মিয়া ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মঙ্গলবার কুমিল্লা আদালতে মামলা করেছেন।

এ মামলার আসামিরা হলো- বাঙ্গামুড়া গ্রামের আক্তার হোসেন, মফিজুল ইসলাম মফিজ, আক্তার মিয়া, শফিউল্লাহ, শরবত আলী ও কাউছার। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান।

মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ববিরোধের জেরে গত রোববার বিকেলে বাঙ্গামুড়া গ্রামের রিয়াদ হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে স্থানীয় মফিজ মিয়ার দোকানের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর সেখানে একই গ্রামের আক্তার হোসেন ও তার সহযোগী আক্তার মিয়া তাঁকে বেধড়ক নির্যাতন করে। প্রকাশ্যে এই নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, সড়কের পাশে দু'জন মিলে রিয়াদ হোসেনকে মাটিতে ফেলে নির্যাতন করছে। এ সময় তিনি মা মা বলে চিৎকার করলেও স্থানীয়রা তাঁকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেননি। তবে একাধিক ব্যক্তি জানান, নির্যাতনের সময় ভয়ে কেউ এগিয়ে যাননি।

মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালে রিয়াদ বলেন, এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী মফিজ মিয়া তাঁকে এর আগে হত্যার চেষ্টাও করেছিল। রোববার আক্তার হোসেন তাঁকে দা দিয়ে মাথা-পায়ে কোপায় এবং আক্তার মিয়া রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটায়। ১৫ দিন ধরে রিয়াদের মা মনোয়ারা বেগম নিখোঁজ রয়েছেন। এরই মধ্যে এমন ঘটনায় হতবিহ্বল পুরো পরিবার।

স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে মফিজ মিয়া। সে বিভিন্ন সময় ৫০টি সাধারণ পরিবারের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালিয়েছে। অনেককে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। কুমিল্লার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান জানান, প্রকাশ্যে নির্যাতনকালে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ করা উচিত।