- সারাদেশ
- মাজার তৈরি নিয়ে দু'পক্ষ মুখোমুখি
মাজার তৈরি নিয়ে দু'পক্ষ মুখোমুখি

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে কবরস্থান থেকে মৃত ব্যক্তির হাড়গোড় তুলে এনে লোকালয়ে মাজার তৈরিকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের পশ্চিম কাজিরপাগলা গ্রামের সীতারামপুর এলাকায় দু'পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় মাজার হলে তা বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদকের আখড়া হয়ে উঠবে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা পদ্মা সেতু উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ছাড়া তাঁরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ইউপি চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন। এলাকাবাসী মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, একই ইউনিয়নের মাওয়া পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় দেলা পাগলা নামের এক ব্যক্তির মাজারে বার্ষিক ওরস পালন হতো। সেই দেলা পাগলার ভাই রাজা খন্দকার ১০ মাস আগে মারা গেলে তাঁকে পদ্মা সেতুর কাছে মাওয়া চৌরাস্তা সংলগ্ন কুমারভোগ কবরস্থানে দাফন করা হয়। চার মাস আগে মৃত ব্যক্তির ছেলে সিফাত খন্দকার কবরস্থান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে জমি কেনেন এবং কোনো স্থাপনা না তুলে ইটের গাঁথুনি দিয়ে ৮ ফুট উঁচু সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন। গত রোববার বিকেলে স্থানীয় কিশোররা ওই বাড়ির পাশে ক্রিকেট খেলতে যায়। ক্রিকেটের বল দেয়ালঘেরা বাড়ির ভেতরে চলে যায়। দেয়াল টপকে বল আনতে গিয়ে কিশোররা ভেতরে একটি কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে আসে। বাড়িটির গেট তালাবদ্ধ থাকায় তারা মই বেয়ে খোঁড়া কবর দেখতে পান। তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মৃত রাজা খন্দকারের কবরের হাড়গোড় এনে মাজার বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিফাত। এতে ফুঁসে ওঠেন এলাকাবাসী।
তাঁদের ভাষ্য, দেলা পাগলার মাজার বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ ও গাঁজাসহ মাদকের আসর ছিল। এখানে মাজার হলে অনুরূপ কর্মকাণ্ড চলবে বলে তাঁদের ধারণা। স্থানীয়রা সেখানে তিন রাত ধরে পাহারা বসিয়েছেন। ওই বাড়ির পাশেই উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান রিনা ইসলামের বাড়ি। তিনি জানান, মাজার হলে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে। তিনি এ ব্যাপারে ইউএনও ও ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
স্থানীয় খালেক শেখ জানান, তাঁরা এখানে মাজার তোলা প্রতিহত করবেন।
সিফাত খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোনো ধরনের মাজার তোলা হবে না। তাঁর বাবার স্মৃতি সংরক্ষণ করতে কাজিরপাগলায় তাঁদের নতুন বাড়িতে বাবার কবরটি স্থানান্তর করতে চাচ্ছেন। তাঁর বাবা মৃত্যুর আগে তাঁর কবর সংরক্ষণ করতে তাঁদের অসিয়ত (নির্দেশ) করে গেছেন। তাঁর চাচা দেলু পাগলার মাজারের মতো কিছু করার ইচ্ছা তাঁদের নেই।
ইউএনও আবদুল আউয়াল বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসাইন জানান, প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে কবর থেকে লাশ তুলে সেখানে মাজার করা যাবে না বলে তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন। আপাতত সেখানে মাজার তৈরি করা বন্ধ রয়েছে।
মন্তব্য করুন