চট্টগ্রামের কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তিন সদস্যের কমিটি প্রধান শিক্ষককে অভিযুক্ত করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তারা। তদন্ত কমিটির প্রধান চসিক রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাজরীজ।

যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠার পর ওই স্কুলের ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনকে স্কুল থেকে গত ২ জানুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত করে চসিক।

এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান তাজরীজ সমকালকে বলেন, প্রতিবেদন তৈরির স্বার্থে সরেজমিন প্রতিষ্ঠানটিতে তদন্তে যান কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রী এবং অফিস সহায়কদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন কর্মকর্তারা। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

তদন্ত কমিটির এক সদস্য বলেন, প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে চ্যাট করার বিষয় স্বীকার করে মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে যৌন হয়রানির অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। তার আচরণ শিক্ষকসুলভ নয়, তা ছাত্রীদের জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে। প্রধান শিক্ষকের চরিত্রগত সমস্যা আছে বলে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কমিটিকে স্কুলের শিক্ষিকারা জানান, কোনো নারী শিক্ষক একা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যেতেন না। কারণ তার চাহনি তাদের কাছে অস্বস্তিকর ছিল। তাছাড়া প্রধান শিক্ষকের কক্ষ সবসময় ভারি পর্দা দিয়ে টানা থাকতো এবং দরজা বন্ধ থাকতো। প্রবেশের আগে বাইরে থেকে নক করেই তারা অনুমতি নিয়ে ঢুকতেন।

কয়েকজন ছাত্রী জানান, প্রধান শিক্ষকের কক্ষে কোনো ছাত্রী মাস্ক পরে গেলে মাস্ক খুলতে বলতেন। পাশাপাশি বোরখা ও হিজাব না পরার নির্দেশনা দিতেন, যা তাদের জন্য অস্বস্তিকর বিষয় ছিল। একাডেমিক কোনো বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে দুজন গেলে তিনি একজনকে কক্ষে ঢুকতে বলতেন। কোনো ছাত্রীকে একা পেলে ফোন নম্বর চাইতেন এবং পরবর্তীতে মেসেজ বা ফোন করতেন।