জলাবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ঝুলন্তপাড়া পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিবের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজিবিষয়ক বিশেষ দূত ও বেলজিয়ামের রানী মাথিল্ডে ম্যারি ক্রিস্টিন জিলেইন। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী ইউনিয়নের কালাবগি গ্রামের ওই এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় রানী উপকূলীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে তাদের জীবন সংগ্রামের গল্প শোনেন।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রানী মাথিল্ডে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনকভাবে প্রত্যাবর্তনে বেলজিয়ামের সহযোগিতা কামনা করেন।

পরে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে সুতারখালীর নলিয়ান মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করেন রানী মাথিল্ডে। তিনি ইউপি পরিষদ ভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনসিডিএফের সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগের লজিক প্রকল্পের অধীনে করা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থেকে স্থানীয়দের পানি সংগ্রহ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এর পর রানী ঝুলন্তপাড়া যান। সেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে দক্ষিণাঞ্চলের অতিদরিদ্র এবং প্রান্তিক মানুষ যেন বাস্তুচ্যুত না হয়, সে জন্য ইউএনডিপি, ইউএনসিডিএফ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইডেন সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগের লজিক প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা নেন।

সফরে রানীর সঙ্গে থাকা তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। উপকূলজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি, এখানে না এলে কারও পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। এসব কীভাবে আমরা মোকাবিলা করছি, রানী তা নিজে দেখেন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।

 সময় খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ :ঢাকায় ফিরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বেলজিয়ামের রানী মাথিল্ডে। বাসস জানায়, সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে বেলজিয়ামসহ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন। রানীকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া ইউরোপের দেশগুলোর অন্যতম বেলজিয়াম। দেশটি বাংলাদেশকে অব্যাহত সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ তুলে তিনি রানীকে বলেন, বাংলাদেশে বিগত পাঁচ বছর মিয়ানমারের ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে অবস্থান করছে, যা আমাদের জন্য একটি বড় বোঝা।

রানী মাথিল্ডে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। এ সময় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত দিদিয়ের ভান্ডারহাসেল্ট, বঙ্গভবনের সচিব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন