বাবা চা-দোকানি। অভাবের তাড়নায় তাঁর একমাত্র মেয়ে শিউলিকে অল্প বয়সে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। মেয়ের অদম্য ইচ্ছের কারণে অবশ্য শেষ পর্যন্ত পড়ালেখা বন্ধ করতে পারেননি। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা সেই হাদিয়া আফরিন শিউলি এখন পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছেন মেয়েটি। তিনি ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠাল ইউনিয়নের নলছিড়া গ্রামের ছুতু মিয়ার সন্তান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছুতু মিয়ার সম্বল বলতে শুধু ভিটেমাটি। চার সন্তানের জনক ছুতু মিয়া ১২ বছর ধরে স্থানীয় কালিরবাজার রেলস্টেশন এলাকায় চায়ের দোকান করছেন। সংসারের ঘানি টানতে না পেরে ছেলে রাব্বি শেখকে রেখেছেন দোকানে। আরেক ছেলে নূরনবী শেখকে দিয়েছেন ওয়ার্কশপে। অপর ছেলে নূর মোহাম্মদ বাবু শেখ পড়াশোনা করছে। একমাত্র মেয়ে শিউলি কৃতিত্বের সঙ্গে জেএসসি পাস করে ভর্তি হয় কালিরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ে। কিন্তু নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে খরচ জোগাতে না পেরে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ছুতু মিয়া।

এ খবর জানতে পেরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলে রাব্বির হস্তক্ষেপে রক্ষা পায় মেয়েটি। আবারও স্কুলে ফেরে সে। বিনামূল্যে শিউলির এসএসসির ফরম পূরণের ব্যবস্থাও করেন তিনি। এসএসসিতে এ প্লাস পেয়ে ভর্তি হয় ময়মনসিংহের সরকারি মুমিনুন্নেছা কলেজে। এর পর দরিদ্রতার সব বাধা উপেক্ষা করে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছেন মেয়েটি। অদম্য শিউলি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে একদিন বিসিএস ক্যাডার হতে চান।