কুমিল্লার দেবিদ্বারে চুরির অপবাদে মো. মামুন (৪০) নামে এক রাজমিস্ত্রিকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য প্লাস দিয়ে তাঁর পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়েছে। গত বুধবার রাত ২টার দিকে উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের পূর্ব নবীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মামুন জানান, কাজ থেকে ফিরে বুধবার রাতে খাওয়ার পর বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে ইউসুফপুর ইউনিয়নের সাবেক সদস্য বশির, তাঁর ছেলে রুবেল, মেহেদি এবং ভাতিজা শামীম, শরিফ ও তাঁদের অনুসারী ইয়াসিন, কাঠমিস্ত্রি রুবেলসহ কয়েকজন মামুনের বাড়িতে আসেন। এ সময় চোর চোর বলে ডাকাডাকি করতে থাকেন তাঁরা। দরজা খুললে মামুনকে টেনেহিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যান। পরিবারের লোকজন আকুতি জানালেও তাঁকে ছাড়েননি। বশিরের বাড়ির আমগাছে সারারাত বেঁধে নির্যাতন করা হয়। পরদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একটি ঘরে বেঁধে আরেক দফা নির্যাতন করেন তাঁরা। মোবাইল চুরির স্বীকারোক্তি নিতে প্লাস দিয়ে মামুনের পায়ের নখ তুলে ফেলেন জুয়েল। এ ঘটনা পুলিশকে জানালে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেন অভিযুক্তরা।

পরে মামুনের স্বজনরা ইউসুফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকারিয়া ম্যানেজারের কাছে বিচার চাইতে যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে সালিশ ডেকে এ ঘটনার মীমাংসা করা হয়। আহতের চিকিৎসাবাবদ বশিরকে ১৫ হাজার টাকা দিতে বলেন চেয়ারম্যান। ওই দিন সন্ধ্যায় মামুনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মামুনের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার বলেন, আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে অভিযুক্তরা হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। গরিব বলে কি আমরা কোনো বিচার পাব না?

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত বশিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া জানান, গ্রামবাসীকে নিয়ে সালিশে বসে ঘটনাটির মীমাংসা করা হয়েছে। মোবাইল চুরি হয়েছে সত্য, কিন্তু মামুনই যে কাজটি করেছেন এর কোনো প্রমাণ মেলেনি।

দেবিদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার জানান, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।