কেউ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ইতি টেনেছিলেন বহু বছর আগে, অনেকে আবার অধ্যয়নরত। তাঁদের মিলনমেলার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ ও অ্যালামনাই। পুরোনো সহপাঠী আর বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ আড্ডায় অন্যরকম একটি দিন পার করলেন তাঁরা। বয়স ভুলে সবাই হলেন একাকার।

এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ পার করেছে ৫০ বছর। গৌরবোজ্জ্বল এই সময়কে স্মরণীয় করে রাখতে উদযাপন করা হচ্ছে দুই দিনব্যাপী উৎসব। 

'উন্নত জীবনের সোপান, পঞ্চাশে চবির পরিসংখ্যান' স্লোগানে উৎসবের অংশ হিসেবে শুক্রবার প্রথম দিন চট্টগ্রাম নগরীতে বের করা হয় বর্ণাঢ্য র‌্যালি। এরপর জিইসি কনভেনশন হলে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। এতে সংগীত পরিবেশন করেন বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। দেশ-বিদেশের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী মিলে আড়াই হাজার চবিয়ান এ উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোর।

সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। র‌্যালি শেষে জিইসি কনভেনশন সেন্টারে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

পরিসংখ্যান বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. ওবায়দুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শিক্ষাজীবনের স্মৃতিময় দিনের কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তাঁরা দেশ ও জাতির উন্নয়নে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিভাগের অবদানের কথাও উল্লেখ করেন। এতে বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রোকনুজ্জামান আজাদ, উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোহাম্মদ ইমদাদুল হক, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শ্যামসুন্দর সিকদার, অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি এসএম নুরুল হক, উপদেষ্টা ড. মাহবুবুর রহমান আজাদ, সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা, বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক মো. সেলিম প্রমুখ।

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে মুক্তিযোদ্ধা অ্যালামনাই ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান, স্মৃতিচারণ, আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে উপস্থিত থাকবেন উপাচার্য অধ্যাপক শিরীণ আখতার।

পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক রোকনুজ্জামান আজাদ জানিয়েছেন, পরিসংখ্যান বিভাগটি চবিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭০ সালে। প্রতিবছর একঝাঁক মেধাবী শিক্ষার্থী এ বিভাগ থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন।

দু'জন শিক্ষক আর ১৬ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এ বিভাগের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে ২৪ জন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে সম্মানে ৫০০ জন, মাস্টার্সে ১০০ জন, দু'জন এমফিলে এবং ৯ জন পিএইচডিতে অধ্যয়নরত আছেন। বিভাগীয় সেমিনারে গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।

শিক্ষকরা জানান, এ বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত ৪ হাজার শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েট, ৩ হাজার ৫০০ জন মাস্টার্স, ২২ জন এমফিল এবং ৮ জন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁরা বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় সুনামের সঙ্গে কাজ করে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখছেন।