নান্দাইল উপজেলার শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চণ্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। অথচ সেখানে নেই কোনো শহীদ মিনার। এ কারণে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর দূরবর্তী স্থানে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা একত্র হয়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তৎকালীন নকশা অনুযায়ী শহীদ মিনার তৈরি করেন। একই সময় চণ্ডীপাশা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে একটি শহীদ মিনার নির্মিত হয়। পরে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা শহীদ মিনারটি ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেয়।

স্বাধীনতার পর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভাষাসংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়ার উদ্যোগে চণ্ডীপাশা উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাসেমব্লি হলের উত্তর পাশে আরও একটি শহীদ মিনার নির্মিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র ও জনতা স্বাধীনতার পর ওই শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করতেন। কিন্তু বিদ্যালয়টি সরকারীকরণের পর সীমানাপ্রাচীর দেওয়ায় সেটি আড়ালে চলে যায়। ২০১৮ সালে বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনের সময় প্রায় ভগ্নদশায় পরিণত মিনারটির জায়গায় শতবর্ষের একটি স্মৃতি স্মারক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু স্থায়ীভাবে আর কোনো শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি।

কলেজ শিক্ষক অরবিন্দ পাল বলেন, 'প্রাচীনতম এই বিদ্যালয়ে একটি শহীদ মিনার না থাকা দুঃখজনক। কত টাকা আমরা কতভাবে খরচ করছি, অথচ একটি শহীদ মিনার তৈরিতে এত কার্পণ্য থাকবে কেন?'

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শফিকুল্লাহর ভাষ্য, তিনি যোগদানের পর থেকে একটি শহীদ মিনার নির্মাণের জোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।