যশোরে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালনের সময় নেতাকর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিপেটা ও ধরপাকড়ের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের বাধায় কোথাও পদযাত্রা কর্মসূচি ঠিকমতো পালন করতে পারেনি বিএনপি। কর্মসূচি পালনের সময় যশোরের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি দলটি। আহতের মধ্যে ৮ জন যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

এদিকে শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আরও ১২ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আটক নেতাকর্মীদের আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শনিবার বেলা তিনটায় যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে জড়ো হন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম সেখানে পৌঁছান। ১০ দফা দাবিতে বাহাদুরপুর থেকে বিএনপির পদযাত্রা শুরু হয়। শহরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ডের দিকে পদযাত্রা অগ্রসর হয়। নওয়াপাড়া মেহগনি মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় কেড়ে নেওয়া হয় ব্যানার। তবুও পদযাত্রা চলতে থাকে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে পৌঁছালে পুলিশ লাঠি পেটা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় নেতাকর্মীরাও ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। সেখান থেকে এক কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

পদযাত্রাটি শহরের শেখহাটি হাইকোর্ট মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত পথসভার মধ্যদিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু পুলিশি বাঁধার মুখে পদযাত্রা পণ্ড হয়ে যায়। মাঝপথেই পদযাত্রা শেষ করতে বাধ্য হন নেতা কর্মীরা। 

জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রাও সরকার সহ্য করতে পারছে না। আমরা পদযাত্রা থেকে শ্লোগান পর্যন্ত দেয়নি। শুধু ১০ দফা দাবি সম্বলিত প্রচারপত্র পথচারী ও দোকানে দোকানে বিলি করা হয়েছে। এতেই পুলিশ পেছন থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিপেটা চালিয়ে পদযাত্রা পণ্ড করে দেয়। এ সময় কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটকও করা হয়েছে।

একই সময়ে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম ফতেপুর ইউনিয়নে পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রাটি যশোর-নড়াইল সড়কের দায়তলা এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ প্রথমে বাধা দেয়। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে পুলিশ লাঠি পেটা শুরু করে। এ সময় নেতাকর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। ফলে পদযাত্রা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তখন মাসুদুর রহমান নামের এক যুবদলের নেতাকে আটক করে পুলিশ। 

তবে এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জুয়েল ইমরান ও কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।

অন্যদিকে সকালে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাতে যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। দলীয় কর্মসূচি পণ্ড করতে নয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে।