যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে আধিপত্য বিস্তরকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ঘটনায় নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক আবদুল মজিদ বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।  

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়াপ্রতিযোগিতা ও নব-নির্মিত চারতলা ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

 পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, বুধবার উপজেলার নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়াপ্রতিযোগিতা ও নব-নির্মিত চারতলা ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। তিনি সন্ধ্যার পরে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি এবং বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের অনুসারীরা প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। 

পরে উভয় পক্ষের অনুসারীরা প্রতিমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে মঞ্চের দিকে যান। শুভেচ্ছা জানানোকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক জানান, সংঘর্ষের সময় বিদ্যালয়ের মাঠে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানের সমর্থকরা আমার কর্মীদের উপর হামলা চালান।’ 

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান আলমগীরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা চেয়ার, সাউন্ড-বক্সসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। 

সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। 

প্রধান শিক্ষক আবদুল মজিদ জানান, সংঘর্ষ এবং ভাঙচুরের ঘটনায় তবিবুর রহমান, আনিচুর রহমান, মিজানুর রহমান, বিল্লাল হোসেন, রবিউল ইসলাম এবং সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। 

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান জানান, সংঘর্ষের সময় পুলিশের কঠোর অবস্থানে ছিল। ফলে হতাহতের তেমন ঘটনা ঘটেনি। 

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র অধ্যক্ষ কাজী মাহামুদুল হাসান, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু, ভোজগাতী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, শ্যামকুড়ের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন প্রমুখ।