বরিশালের হিজলায় মেঘনা নদীর পাড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বড়জালিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন হাওলাদারের একটি মাছঘাট গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন।

গতকাল রোববার রাতে গৌরবদী ইউনিয়নের খালিসপুর এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলায় তিনজন আহত হন। তাঁরা উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এনায়েত হাওলাদারের অভিযোগ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও গৌরবদী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলনের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে। রোববার রাত ৮টার দিকে ৭০-৮০ জন লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে খালিসপুর এলাকায় তাঁর মাছঘাটে হামলা চালায়। চেয়ারম্যান মিলনের ভাই শাকিল ও গৌরবদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন দফাদার হামলায় নেতৃত্ব দেন। হামলাকারীরা মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ ১৬ লাখ ও তাঁর ক্যাশে থাকা পাঁচ লাখ টাকাসহ অন্যান্য আসবাব লুট করে নিয়ে গেছে। এ ছাড়া মাছঘাটের পাশে থাকা একটি দোকানেও লুটপাট চালানো হয়।

এনায়েত হাওলাদার আরও জানান, হামলাকারীরা তাঁর কর্মচারী তিতাস মাঝি, মিলন সরদার ও জাকিরকে পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে তারা তিতাসকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল। তাঁকে ঘটনার সাত-আট ঘণ্টা পর মেঘনার অপর তীর নোয়াখালীর রায়পুর-লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। খালিসপুরের মাছঘাটটি তিনি তিন মাস আগে স্থাপন করেন। এর ৩০০ গজ দূরেই মিলন চেয়ারম্যানের মাছঘাট রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মেঘনাপাড়ের মাছঘাটগুলো এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন গৌরবদী চেয়ারম্যান মিলন। তাঁর একারই রয়েছে ২৪টি মাছঘাট। তাঁর ঘাটে জেলেদের মাছ বিক্রি করতে বাধ্য করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। কয়েক মাস আগে মিলন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদটি হারান। এর মধ্যে বড়জালিয়া চেয়ারম্যান এনায়েত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এরপর তিনি গৌরবদীতে কয়েকটি মাছঘাট স্থাপন করেন। এ নিয়ে মিলন ও এনায়েতের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল।

চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলন বর্তমানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। একই বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান মিলনের ভাই শাকিলকে ফোন করা হলে তাঁর নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।

গৌরবদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন দফাদার বলেন, তিনি অসুস্থ। হামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না। এরপর তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

হিজলা থানার ওসি বলেন, রোববার রাতে খালিসপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা এনায়েত হাওলাদারের একটি মাছঘাট ভেঙে ফেলেছে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলনের লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে।