গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) এ এস এম সফিউল আজম বলেন, মশক নিধন কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। খুব দ্রুত মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতাল নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। তবুও মশার উপদ্রব কমছে না। রোগীদের রাতে মশারি দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশনকে ওষুধ ও ফগার মেশিনের জন্য বলা হয়েছে। তারা প্রতিদিন বিকেলে ওষুধ স্প্রে করবে বলে জানিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন কিউলেক্স মশার উপদ্রব চলছে। স্ত্রী মশার মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তির শরীর থেকে সুস্থ ব্যক্তির ফাইলেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। এ রোগের কারণে হাত-পা ফুলে যায়, বারবার জ্বর হয়। ম্যালেরিয়া ও চিকুনগুনিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বর্ষা মৌসুমে বাড়তে পারে এডিস মশার উপদ্রব। প্রতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এ জন্য বর্ষার আগেই উদ্যোগ নিতে হবে। সচেতনতা বাড়াতে হবে।

আউচপড়া এলাকার বাড়ির মালিক মোবারক হোসেন জানান, মশার যন্ত্রণায় ঘরে-বাইরে এক স্থানে বেশিক্ষণ থাকা যায় না। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে মশা ঘিরে ধরে। মসজিদে নামাজ পড়তে মুসল্লিদের কষ্ট হয়।

হাসপাতালের তথ্যমতে, গত এক সপ্তাহে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে শতাধিক রোগী। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। রোগবালাইয়ের সংক্রমণ বাড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগে রয়েছেন।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের আঙিনা ও ভেতরে দিনের বেলায়ও মশা উড়ছে। ধোঁয়ায় রোগীদের কষ্ট হওয়ায় কয়েলও জ্বালানো যাচ্ছে না। ফলে অসুস্থ রোগী ও তাঁদের সঙ্গে থাকা স্বজনরাও ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এলাকার অধিকাংশ নালা সংস্কার না হওয়ায় নাগরিকরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। সময়মতো রাস্তাঘাট ও খোলা জায়গা থেকে ময়লা অপসারণ না করায় বাড়ছে মশার উৎপাত। শহরের অধিকাংশ সড়কের পাশের নালার ময়লা তুলে সড়কে রাখা হচ্ছে। সঙ্গে স্তূপ করে রাখা আবর্জনা ও যত্রতত্র ডাস্টবিন উন্মুক্ত ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এরপরও মশক নিধন অভিযান ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন গাজীপুরের টঙ্গীর বাসিন্দারা। দিন-রাত সমানে উপদ্রব চলছে। বসতবাড়ি, খেলার মাঠ, হাসপাতালসহ সব জায়গায়ই মশা। দিনের বেলায়ও জানালা-দরজা খুলে রাখার উপায় নেই। কোথাও বসলেই একসঙ্গে অসংখ্য মশা ঘিরে ধরছে। কয়েল, স্প্রে বা মশা মারার ব্যাট ব্যবহার করলেও কাজ হচ্ছে না। এতে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। এ অবস্থায় বর্ষার আগেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।