৭৪-এর আলোচিত বাসন্তী পাবেন আজীবন আর্থিক সহায়তা
বাসন্তী দাস
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ | ০৫:০৪
১৯৭৪ সালের সেই আলোচিত বাসন্তীকে আজীবন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা প্রশাসন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে বাসন্তীকে ভরণপোষণের জন্য ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
১৯৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষের সময় লজ্জা নিবারণের জন্য বাসন্তী ও দুর্গতির জাল পরা ছবিটি দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছিল।
ইতোমধ্যে বাসন্তীর বসবাসের জন্য সরকারিভাবে একটি পাকা ঘর দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিনোদনের জন্য দেওয়া হয়েছে একটি টেলিভিশন। জেলেকন্যা বাসন্তী দাস বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেক আগে থেকেই প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে আসছেন। গত সোমবার স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে মাসিক সাড়ে ৪ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হলো।
আলোচিত বাসন্তী চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জেলেপাড়া গ্রামের মৃত কান্দুরাম দাস ও মৃত শুটকী বালা দাসের মেয়ে। দুর্গতি তাঁর ছোট বোন। ১৯৭৪-এর পর দুর্গতি ভারতে চলে যান। এখন তিনি বেঁচে নেই বলে জানা যায়। বাসন্তী চার ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তাঁর ছোট ভাই বিষু চন্দ্র দাসও মারা গেছেন। বর্তমানে বেঁচে আছেন বড় ভাই আশু চন্দ্র দাস (৮০)। বাসন্তী তাঁর মৃত ছোট ভাই বিষু চন্দ্র দাসের স্ত্রী নিরুবালা দাসের সঙ্গে বসবাস করেন।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, গত বছর নভেম্বরে উপনির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আগের জনপ্রতিনিধিরা কেন বাসন্তীর ব্যাপারে স্থায়ী কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, সেটা তিনি জানেন না। তবে তিনি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই বাসন্তীর স্থায়ী ভরণপোষণের বিষয়টি নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, বাসন্তীর দারিদ্র্যের গল্পটি চিলমারীর অনেকের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিলেও বাসন্তীর ভাগ্যের তেমন কোনো পরির্বতন হয়নি।
এ বিষয়ে ইউএনও মাহবুবুর রহমান বলেন, চিলমারীতে ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর তিনি বাসন্তীর খোঁজখবর নেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাসন্তী উপজেলা প্রশাসন থেকে আর্থিক সহযোগিতা পাবেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন। ব্যক্তিগতভাবেও জেলেকন্যা বাসন্তীর খোঁজ রাখবেন তিনি।