স্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদ রংপুরের শঙ্কু সমজদারের প্রয়াণ দিবস ছিল শুক্রবার (৩ মার্চ)। দিনটিতে তাঁর রক্তে রঞ্জিত হয় রংপুরের মাটি। অবাঙালির গুলিতে নিহত হন কিশোর শঙ্কু। রংপুরবাসী প্রতি বছর দিনটিকে ‘শঙ্কু দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন। এ উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শহীদজননী শঙ্কুর মা দীপালি সমজদার শয্যাশায়ী। জীবন সায়াহ্নে এসে তাঁর চাওয়া শহীদ সন্তানের জন্য যেন স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। তবে তাঁর চাওয়া পূরণে দ্রুতই স্থান নির্ধারণ করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে- এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রংপুরের জেলা প্রশাসক চিত্রলেখা নাজনীন। শুক্রবার নগরীর কামালকাছনা এলাকায় শহীদ শঙ্কুর মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়া হয়। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য নাজমুল করিম ডলার, সাংবাদিক বাবলু নাগ, মেরিনা লাভলী, হুমায়ুন কবীর মানিক উপস্থিত ছিলেন।

১৯৭১ সালে শহীদ হওয়া শঙ্কু সমজদারের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁকে এ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে আজ বিকেলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট রংপুর জেলা শাখা ও সন্ধ্যায় রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে শহীদ শঙ্কু সমজদার বিদ্যানিকেতনে আলোচনাসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।

পাকিস্তানি দখলদারদের কাছ থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল রংপুরের মানুষ। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ যুবক, ছাত্র, কৃষক, দিনমজুর, নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের জনতা কারফিউ ভাঙার জন্য রংপুর শহরের কাচারিবাজারে সমবেত হন। সকাল ৯টায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া কৈলাশরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র শঙ্কু সমজদার তার ভাই কুমারেশ সমজদারের হাত ধরে গুপ্তপাড়ার বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন মিছিলে অংশ নিতে। মিছিলটি আলমনগর এলাকার অবাঙালি ব্যবসায়ী সরফরাজ খানের বাসার সামনে যেতেই শঙ্কু দেওয়ালের উর্দু লেখা সাইনবোর্ড নামাতে ছুটে যান। তখনই বাসার ছাদ থেকে মিছিলে গুলি চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ হন শঙ্কু সমজদার। হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান কিশোর শঙ্কু।


বিষয় : শঙ্কু দিবস শঙ্কু সমজদার

মন্তব্য করুন