- সারাদেশ
- জমিতে কীটনাশক দেওয়ার পর পুড়ে গেছে ধানের চারা
জমিতে কীটনাশক দেওয়ার পর পুড়ে গেছে ধানের চারা

চলতি বোরো মৌসুমে প্রথমে চার কাঠা ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করেন কৃষক আব্দুল আজিজ। কীটপতঙ্গের বদলে পরদিন থেকেই মরতে শুরু করে ধানের চারা। জমির সব চারাগাছ মরে গিয়ে খড়ের বর্ণ ধারণ করেছে। বাকি তিন কাঠা জমির চারাও মরতে শুরু করেছে। কৃষক আব্দুল আজিজের বাড়ি নান্দাইল উপজেলার দাতারাটিয়া গ্রামে। মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ছিটানোর কারণে এমনটি হতে পারে বলে ধারণা করছে স্থানীয় কৃষি অফিস।
শুক্রবার বিকেলে কথা হয় কৃষক আব্দুল আজিজের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বাড়ির পাশে হিদলী বিলপাড়ের কাছাকাছি তাঁর দুই খণ্ড জমি রয়েছে। এর একটি চার কাঠা, অন্যটি তিন কাঠা। প্রথমটিতে পৌষ মাসে এবং দ্বিতীয়টিতে মাঘ মাসের শেষের দিকে নিজ বীজতলায় উৎপন্ন হাইব্রিড-২৮ জাতের ধানের চারা রোপণ করা হয়। অনেক আগে রোপণ করায় চার কাঠা জমির ধানের চারা ঘন সবুজ হয়ে ওঠে। সম্প্রতি দুটি জমিতেই পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় ঝালুয়া বাজারের হাফিজ উদ্দিনের দোকান থেকে এসিআই কোম্পানির কীটনাশক ‘এসিমিক্স’ কিনে জমিতে প্রয়োগ করা হয়। পরের দিন সকালে জমিতে গিয়ে দেখা যায় চার কাঠা জমির চারা নেতিয়ে পড়ছে। এরপর থেকে আগুনে পোড়ার মতো হয়ে মরতে শুরু করেছে।
জমিতে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন উৎসুক ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত দেখতে এসেছেন। জানতে চাইলে বৃদ্ধ আব্দুল কাদির বলেন, ‘কীটনাশক দিছে নাকি ভুল কইরা ঘাস মারার ওষুধ দিছে হেইডা কেডা জানে।’
আব্দুল আজিজ জানান, এখানে বিএসকে (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা সাবেক ব্লক সুপারভাইজার) পাওয়া যায় না। নিজেরা যেমন বোঝেন তেমনই কাজ করেন। কী কারণে এমন হয়েছে বুঝতে পারছেন না তিনি। ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে এখন কান্নাকাটি করলে কী হবে। তবে এসিআই কোম্পানির লোকজন এসে জমিটি দেখে গেছেন। তাঁরা আশ্বাস দিয়ে গেছেন প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণ দেবেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কাছে থাকা এসিআই কোম্পানির মোবাইল নম্বরে কল দিলে রিসিভ করেন মিলন মিয়া নামে এক ব্যক্তি। নিজেকে এসিআই কোম্পানির স্থানীয় পেস্ট ম্যানেজমেন্ট অফিসার (পিএমও) পরিচয় দিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই কৃষক যে মেশিন দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করেছেন সম্ভবত তাতে আগে স্প্রে করা কিছু আগাছানাশক ওষুধ ছিল। আবার এমনও হতে পারে পানিতে কীটনাশক মেশানোর মাত্রা সঠিক হয়নি। এসব কারণে এমন হতে পারে। তবে বিষয়টি আমাদের নজরদারিতে আছে।’
জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুজ্জামান বলেন, কৃষক তাঁর জমিতে বেশিমাত্রার কীটনাশক দিয়েছেন বলেই এমন হয়েছে। তবে কোনো উপায়ে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় কিনা তার চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন