ফরিদপুরে রাজু কুমার সাহা (২৫)  নামে এক যুবককে হত্যার দায়ে আরেক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টায় ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের নাম জসিম মোল্লা (২৩)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জসিম মোল্যা মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি গ্রামের অরুন রানী সাহার বাড়িতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। অরুনা রানির ছেলে রাজু কুমার সাহা বাড়ি নির্মাণ কাজ তদারকি করতেন। সেই সুবাদে রাজুর সাথে জসিমের পরিচয় হয়। রাজু ও জসিম প্রায়ই নির্মাণাধীন ভবনে রাতে থাকতেন ও আড্ডা দিতেন। রাজু সবসময় স্বর্ণের আংটি, ব্রেসলেট এবং স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতেন। জসিমের রাজু সাহার ব্যবহৃত স্বর্ণের প্রতি লোভ হলে তা লুট করতে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে।  ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের ২ তারিখে জসিম রাতে রাজুদের নির্মাণাধীন বাড়িকে একা থাকবে বলে ভিকটিমকে তার সাথে থাকতে বলে। রাজু রাজী হলে রাত সাড়ে ১০ দিকে তারা নির্মাণাধীন ভবনে থাকতে যায়। একসঙ্গে তারা রাজুর মোবাইলে মুভি দেখেন। রাত ৩টার দিকে রাজু বাথরুমে যেতে দোতলা থেকে নিচে নামলে জসিম লোহার শাবল হাতে রাজুর সাথে নিচে নামে। রাজু এসময় শাবল কেন জানতে চাইলে জসিম বলে, নিচে শেয়াল কুকুর থাকতে পারে এজন্য আনছি। এসময় রাজু  প্রসাব বসলে জসিম শাবল দিয়ে রাজুর ঘাড়ে আঘাত করে। এ সময় রাজু পড়ে গেলে জসিম শাবল দিয়ে একাধিক আঘাত করে তাকে হত্যা করে। পরে লাশটি নির্মাণাধীন ভবনের পাশে শ্রমিকদের ব্যবহারের অস্থায়ী টয়লেটের ট্যাংকির মধ্যে ফেলে দেয়। জসিম এসময় রাজুর মরদেহ যাতে কেউ খুঁজে না পায় এজন্য ট্যাংকির মধ্যে রাজুর মরদেহ রেখে ইটের শুড়কি দিয়ে ঢেকে দেয়।

পরের দিন মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় রাজুর পরিবার তাকে খুঁজতে গিয়ে গিয়ে নির্মাণাধীন বাড়িতে রক্ত দেখতে পায়। এক পর্যায়ে টয়লেটের ট্যাংকির পাশে আরও রক্ত দেখতে পেলে তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে ট্যাংকির ভেতরে ইটের শুড়কি চাপা দেওয়া লাশ পায়। এদিকে জসিম সেদিন ভোরেই রাজুর স্বর্ণের আংটি, ব্রেসলেট ও মোবাইল ফোন নিয়ে আর কাজ করবে না বলে চলে যায়।

এ মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাড. নওয়াব আলী বলেন, আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার পেয়েছে।