নওগাঁর রাণীনগরে আগুন লেগে সাত ভাইয়ের বসতবাড়িসহ সব মালপত্র পুড়ে গেছে। এসময় অতিরিক্ত ধোঁয়ায় শাপিন প্রামানিক (৩৬) নামে একজন মারা গেছেন। রোববার গভীর রাতে উপজেলার পাকুড়িয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাণীনগর,নওগাঁ ও আদমদীঘি থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,থানার ওসি,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহত শাপিন ওই গ্রামের আফছার আলীর ছেলে।

শাপিনের বড় ভাই সেকেন্দার আলী (৬৫) জানান, রাতে সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ করেই রাত সোয়া একটায় বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখেন। তাদের চিৎকারে গ্রামের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। পরে রাণীনগর ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারাও ছুটে আসে। এরপরে তারাও আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নওগাঁ এবং আদমদীঘি ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে তিনটি ইউনিট মিলে প্রায় দেড় ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

সেকেন্দার আলী আরও জানান,আগুনে তাদের ৭ ভাইয়ের ৭টি মাটির দোতলা বাড়ি,আসবাবপত্র,ধান,চাল,সরিষাসহ সব মালামাল পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায়। এর পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন শাপিনের ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার মরদেহ উদ্ধার করে। তবে কীভাবে এই আগুনের সুত্রপাত হয়েছে তা বলতে পারেননি সেকেন্দার আলী।

রাণীনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র ফায়ার ফাইটার জিয়াউল হক বলেন,আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নওগাঁ এবং আদমদীঘি থেকে আরও দুটি ইউনিটের সহযোগিতা নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এবং শাপিন নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শাপিন অতিরিক্ত ধোঁয়ায় মারা গেছেন বলে জানান তিনি। এছাড়া আগুনে ৭টি বাড়ির সমস্ত মালামাল এবং তিনটি খরের পালা ভস্মিভূত হয়েছে। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মশার কয়েল থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন,অগুনে ৭টি বাড়ির সমস্ত মালামাল পুরে ভস্মিভূত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে কিছু নগদ অর্থ,বস্ত্র,চাল-ডাল সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি নির্মাণ ও পুনর্বাসনের সার্বিক সহায়তা করা হবে।

রাণীনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন,আগুনে নিহতের ঘটনায় শাপিনের স্ত্রী মরিয়ম নেছা পপি বাদী হয়ে একটি ইউডি মামলা দায়ের করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।