ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নে আগামী ১৬ মার্চ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে নাটকের অবসান হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সমাধান না হওয়ায় বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ফকির বেলায়েত হোসেন নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেনে নিয়েছেন। রোববার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে বেলায়েত জানিয়েছেন, অটোরিকশা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই লড়বেন তিনি।

এর আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তে কানাইপুর ইউনিয়নে ফকির বেলায়েতকে নৌকার প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে হঠাৎ দলীয় প্রার্থী পরিবর্তন করে বেলায়েত হোসেনের স্থলে সাইফুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা জানায় আওয়ামী লীগ। ওই দিনই ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ফলে সাইফুল আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে এবং বেলায়েত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরদিন মনোনয়নপত্র বাছাইকালেও সাইফুলকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বেলায়েতকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়। কিন্তু গত ২১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন আবার পরিবর্তন করে বেলায়েতকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় যেন তাঁকে আবার নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেয়, এ জন্য বেলায়েত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিটও করেছিলেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বেলায়েতকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আদেশ দেন। এর প্রতিবাদে সাইফুল আলম সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে আপিল করেন। ফলে গত ১ মার্চ আদালত উভয় প্রার্থীর কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা জারি করে ৫ মার্চ চূড়ান্ত শুনানির তারিখ ধার্য করেন। কিন্তু ওই দিন রাতে ফেসবুক লাইভে এসে বেলায়েত নিজের স্বতন্ত্র প্রার্থিতা মেনে নেন।

লাইভে এসে ফকির বেলায়েত বলেন, ‘৫ মার্চ শুনানিতে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি এম. এনায়েত রহিম ও বিচারপতি জাহাঙ্গির হোসেনের বেঞ্চ আগামী এক মাসের মধ্যে সাইফুল ইসলামকে সিভিল পিটিশন দাখিলের আদেশ দেন। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন, তবে নির্বাচন স্থগিতের ব্যাপারে কোনো আদেশ দেননি। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দকৃত অটোরিকশা প্রতীক নিয়েই নির্বাচন করব। আমি আওয়ামী লীগ করি। তাই নেত্রীর সম্মান রক্ষার্থে আমি মনে করি, এটাই আওয়ামী লীগের মার্কা। এটাই নেত্রীর মার্কা। এই মনোনয়নকে কেন্দ্র করে যে সমালোচনা, তার ভার আমি দলীয় নেতাদের কাছে দিয়ে রাখলাম। আমি আপনাদের কাছে দোয়া ও সমর্থন চাই।’

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ বলেন, শুধু কানাইপুর নয়, সদর ইউনিয়নের নির্বাচনগুলোয় যাঁরা নৌকা প্রতীক পেয়েছেন, দলের নেতাকর্মী ও অঙ্গসংগঠনের সবাই তাঁদের পক্ষে কাজ করছে।