সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আমিনা খাতুন (১৮) নামে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আমিনা খাতুন উপজেলার আটুলিয়া ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের গোলাম মোস্তফার মেয়ে। তিনি স্থানীয় আব্দুল কাদের কলেজিয়েট স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। প্রতিবেশীদের দাবি, সৎ মায়ের অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়ে কিশোরী আমিনা আত্মহত্যা করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর গোলাম মোস্তফা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আগের সংসারে এক মেয়ে ও দুই সন্তান থাকলেও তাদের সহ্য করতে পারতেন না দ্বিতীয় স্ত্রী। বাধ্য হয়ে দুই ভাই বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করে জুনিয়র পর্যায়ের লীগ খেলে নিজেদের পাড়াশোনার খরচ যোগানো শুরু করে। কলেজে ভর্তি হওয়া নিয়ে সৎ মায়ের মারধরের শিকার হয়েছিলেন আমিনা। এসব অব্যাহত নির্যাতন ও অত্যাচার দেখেও স্ত্রীকে কোনো শাসন করতেন না বাবা গোলাম মোস্তফা।

নিহত কিশোরীর বড় ভাই বিলাল হোসেন অভিযোগ করে জানান, আমিনাকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন তাদের সৎ মা। তিনি বলেন, ফুটবল খেলতে তিনি রাজশাহীতে অবস্থানকালে রাত তিনটার দিকে বোন মারা যাওয়ার খবর পান। এসময় তিনি বোন আমিনা অভিমানে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেন।

প্রতিবেশী আবুল বাসার ও আজিজুল হক জানান, আমিনার উপর সৎ মা-বাবার অত্যাচার নির্যাতনের খবর গ্রামের সবাই জানে। দীর্ঘদিন ধরে নানা যন্ত্রণা সহ্য করলেও হঠাৎ তার আত্মহত্যার বিষয়টি রহস্যঘেরা। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের দাবি জানান তারা।

নিহত কিশোরীর বাবা গোলাম মোস্তফা জানান, পাশের ঘরে থাকলেও মেয়ের মারা যাওয়ার বিষয়টি তারা বুঝতে পারেননি। সন্ধ্যার দিকে ডাকতে গিয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বাদল জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, আত্মহত্যা করেছেন ওই কিশোরী। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।