বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সড়কের দুই পাশে ভাড়া নেওয়া ভবনে ১১টি পরিবহন কোম্পানির কাউন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব কাউন্টার কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে দেখা করতে। কাউন্টারগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাস্তায় বাস রেখে তারা যাত্রী ওঠানামা করানোয় যানজট হয়। তাই মেয়র ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে কাউন্টারে তালা মারা হয়েছে। অথচ টার্মিনালের দক্ষিণ প্রান্তে মহাসড়কের পাশেই চালু রয়েছে মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইছ আহমেদ মান্নার নিয়ন্ত্রণাধীন দুটি পরিবহনের কাউন্টার। মান্না বাস মালিক গ্রুপের নির্বাহী সদস্য হলেও মেয়রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে তাঁর বিরুদ্ধে পুরো টার্মিনাল এলাকা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে।

টার্মিনাল সূত্র জানায়, গত সোমবার রাতে জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে ও পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বে ১১টি পরিবহন কাউন্টারে তালা মারা হয়। কাউন্টারগুলো গ্রিনলাইন, এনা, সোহাগ, শ্যামলী, ইউনিক, সাকুরা, হানিফ, টাইম ট্রাভেলস, ইউরো বিএম ও মিজান পরিবহনের। অথচ রাস্তার পাশে এখনও চালু আছে ছাত্রলীগ নেতার নিয়ন্ত্রণাধীন ইলিশ ও বিএমএফ পরিবহনের কাউন্টার। পদ্মা সেতু চালুর পর ওই ১১ পবিবহন প্রতিষ্ঠান ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে বিলাসবহুল বাস সার্ভিস চালু করেছিল। এ জন্য বরিশালের মূল টার্মিনাল ভবনে কাউন্টার থাকার পাশাপাশি সড়কের দুই পাশে ভাড়া ভবনে বড় পরিসরে কাউন্টার স্থাপন করে তারা। সেখানে যাত্রীদের বিশ্রামের সব সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়।

বন্ধ কাউন্টারগুলোর কয়েকজন ব্যবস্থাপক বলছেন, দু’দিন নানাভাবে চেষ্টা করেও তারা মেয়রের সাক্ষাৎ পাননি। আসলে চাঁদাবাজির জন্যই কাউন্টারগুলো বন্ধ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ বলেন, টার্মিনাল এলাকায় যানজট নিরসনে মেয়র ও পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে মূল সড়কের দুই পাশে থাকা কাউন্টারগুলো বন্ধ করা হয়েছে। তবে আমরা কাউকে মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে বলিনি। ইলিশ এবং বিএমএফ পরিবহনের সড়কের পাশের কাউন্টার বন্ধ না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টার্মিনালের ওই দিকে যানজট সমস্যা নেই। 

বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, টার্মিনাল এলাকায় যানজট ও শৃঙ্খলা ফেরাতে মেয়র ও পুলিশ কমিশনার সড়কের দুই পাশের কাউন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে আমরা কাউন্টারগুলোকে সরে যেতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা নির্দেশ অমান্য করেছে। 

এদিকে কোনো কাউন্টার বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, কোনো কাউন্টার বন্ধের নির্দেশ দেইনি। সড়কের ওপর বাস রেখে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করার জন্য বলেছিলাম।