দিনাজপুরে ত্রিভুজ প্রেমের জেরে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় কলেজছাত্র শাহরিন আলম বিপুলকে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রেমিকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বেলা ১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহম্মেদ। 

গ্রেপ্তার যুবকরা হলেন- সদর উপজেলার শালকী (বোয়ালমাড়ী) এলাকার রশিদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২০), উপশহরের উজ্জ্বল হোসেনের ছেলে শাকিব শাহরিয়ার (২২), একই এলাকার হামিদুর রহমানের ছেলে আসিফ মাহমুদ হৃদয় (১৯) এবং নিশ্চিতপুর এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে আশরাফুল হোসেনে মিলন (১৮)। 

পুলিশ সুপার বলেন, সম্প্রতি প্রাক্তন প্রেমিকার বান্ধবীর সঙ্গে কথার বলা শুরু করেন দেলোয়ার। এর একপর্যায়ে ওই মেয়েকে পছন্দ করতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু কিছুদিন আগে ওই মেয়ের সঙ্গে শাহরিন আলম বিপুলের বন্ধুত্ব হয়। তাদের বন্ধুত্ব বিষয়টি দেলোয়ার মেনে নিতে পারছিলেন না। এ কারণে বিপুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন গ্রেপ্তার দেলোয়ার। 

তিনি আরও বলেন, বিপুল দিনাজপুর সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছবি তুলতে পছন্দ করতেন। এই বিষয়টি জানতে পেরে দেলোয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভুয়া আইডি খুলে বিপুলের সঙ্গে কথোপকথন শুরু করেন। কথোপকথনের মাত্র ৩ দিনের মাথায় একটি ক্যামেরা ধার দেওয়ার কথা বলে বিপুলকে দিনাজপুর স্টেডিয়ামে আসতে বলেন দেলোয়ার। এমনকি আসার জন্য তাকে বিকাশে ১০০ টাকা পাঠান হয়। বিপুল স্টেডিয়ামে এলেই বান্ধবীকে নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ারসহ তার কয়েকজন বন্ধু মিলে পেছন থেকে বিপুলে মাথার আঘাত করেন। পরে গলায় চাকু মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তারা। বিপুলের মরদেহ স্টেডিয়ামের সিঁড়ির নিচে ময়লার স্তূপের মধ্যে রেখে পালিয়ে যান হত্যাকারীরা।

তিনি আরও বলেন, পরে বিপুলকে মেসেঞ্জারে পাঠানো টেক্স মুছে দেন দেলোয়ার। এমনকি ওই ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভ করে দেন তিনি। মূলত ত্রিভুজ প্রেমের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। 

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল ও ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত আরও দুজন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আসামিদের আদালতে পাঠানো হবে এবং রিমান্ড আবেদন করা হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার (৪মার্চ) সকাল ৯টার দিকে ওষুধ কেনার কথা বলে বাসা থেকে বের হন শাহরিন আলম বিপুল। পরে আর বাসায় ফেরেননি তিনি। কোথাও না পেয়ে রোববার রাতে কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন নিহত বিপুলের বড় ভাই শাহরিয়ার আলম। সোমবার (৬মার্চ) দুপুরে দিনাজপুর জেলা স্টেডিয়ামের সিঁড়ির নিচে ময়লার স্তূপ থেকে বিপুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।