জামালপুরের বকশীগঞ্জে আয়া পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক বিধবার কাছ থেকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। মৌলভী পাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুস সাত্তার, সভাপতি আবদুল হামিদ ও সদস্য ফরহাদুজ্জামান ফোটার বিরুদ্ধে এই টাকা নেওয়ার অভিযোগ। এখন চাকরি না পাওয়ায় টাকা ফেরত পেতে ঘুরছেন ভুক্তভোগী। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন সুপার আবদুস সাত্তার।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, টাকা ফেরতের দাবিতে সুপারের অফিসের সামনে অবস্থান করছেন ভুক্তভোগী দুই নারী। তবে তাঁরা আসার আগেই হাজিরা খাতায় সই করে চলে গেছেন সুপার।

সেখানেই কথা হয় ভুক্তভোগী নারীর মা নুরুন্নাহারের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। মাদ্রাসার সুপার আবদুস সাত্তার ও সভাপতি আবদুল হামিদের পরামর্শে তাঁর বিধবা মেয়ে সুফিয়া আক্তারকে আয়া পদে আবেদন করান। এর পর তাঁকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ৬ লাখ টাকা দাবি করেন তাঁরা।

নুরুন্নাহার বলেন, ‘ধারদেনা করে মাদ্রাসার সভাপতি আবদুল হামিদ, সুপার আবদুস সাত্তার ও অভিভাবক সদস্য পৌর কাউন্সিলর ফরহাদুজ্জামান ফোটার হাতে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেই। বাকি ৭৫ হাজার টাকা নিয়োগ পরীক্ষা শেষে দেওয়ার কথা জানাই।’ পরে জানতে পারেন একই পদের জন্য আরেক প্রার্থীর কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সভাপতি ও সুপারকে জানালে সুফিয়াকে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন। তবে তাঁর চাকরি হবে না বলে হুমকি দেন অভিভাবক সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর ফরহাদুজ্জামান ফোটা। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় ৬ মাস পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন সুপার আবদুস সাত্তার। এ সময় বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। পরে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।

মাদ্রাসার সুপার আবদুস সাত্তার বলেন, ‘অফিসিয়াল কাজে অনেক সময় বাইরে থাকতে হয়। টাকা দেওয়ার ভয়ে অফিসে যাই না– কথাটা ঠিক নয়।’

মাদ্রাসার সভাপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘ফোনে তো আর সব কথা বলা যায় না, সাক্ষাতে বলবো।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরোয়ার আলমের ভাষ্য, সমঝোতার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। সুপার ছুটি না নিয়ে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।