- সারাদেশ
- কিশোরগঞ্জে হোটেল কর্মচারী হত্যা: সিসি ক্যামেরা এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল
কিশোরগঞ্জে হোটেল কর্মচারী হত্যা: সিসি ক্যামেরা এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল
-samakal-640bce1bcd127.jpg)
পুলিশ সুপারকে ভাই হত্যার ঘটনাস্থল দেখাচ্ছেন রকির ভাই মো. রবিন মিয়া। ছবি: সমকাল
কিশোরগঞ্জে এক হোটেল কর্মচারীর চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমেছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ। তিনি গতকাল শুক্রবার হোটেলের নিচতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত এবং আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করেছেন। হোটেলের সিঁড়ির চারটি সিসি ক্যামেরার একটির ঘটনার সময় রহস্যজনক কারণে বন্ধ ছিল বলে এসপি জানিয়েছেন।
হোটেল মালিক আবু সাঈদকে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন এসপি মোহাম্মদ রাসেল শেখ। অন্যথায় তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি।
শহরের স্টেশন রোডের গাঙচিল রেস্তোরাঁর কর্মচারী নিকলীর শহরমূল এলাকার শাহাবুদ্দিনের ছেলে রকি (২০) গত ১ মার্চ রাতে রহস্যজনকভাবে খুন হন। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মূল ঘটনা এখনও উদঘাটিত হয়নি।
রকির বড়ভাই একই হোটেলের কর্মচারী মো. রবিন মিয়া (২৩) জানিয়েছেন, ১ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে হোটেলের পেছনে নরসুন্দা নদীর পাড়ে রকির নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার দুই পা ভাঙা ছিল। মুখের চোয়াল একদিকে ভাঙা ছিল। শরীরের বিভিন্ন জায়গায়ও আঘাতের চিহ্ন ছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক রকিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রকির বাবা শাহাবুদ্দিন বাদি হয়ে পরদিন সদর থানায় মামলা করেন। ঘটনার আগের দিন শহরতলির বগাদিয়া এলাকার এনামুল (২২) নামে এক যুবকের সঙ্গে রকির ঝগড়া হয়েছিল। ফলে মামলায় এনামুলকে সন্দেহজনক আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এনামুল এবং রকির গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে একই হোটেলের কর্মচারী শান্তকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার আগের দিন শান্তর কাছে রকিকে হত্যার হুমকির কথা বলেছিলেন এনামুল।
এসপি মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানিয়েছেন, রকি এবং এনামুল একসঙ্গে নেশা করতো। ঘটনার রাত ১০টার দিকে হোটেলের অপর কর্মচারী শোলাকিয়া এলাকার রাজিবের (১৫) সঙ্গে সর্বশেষ মোবাইলে রকির কথা হয়েছিল। কিন্তু হোটেলের সিঁড়িতে চারটি সিসি ক্যামেরার তিনটি সবসময় সচল থাকলেও একটি ক্যামেরা রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। এই সময়ের আগে-পরে ক্যামেরাটি সচল ছিল। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, ওই এক ঘণ্টার মধ্যে ছয়তলা হোটেলের কোনো এক জায়গায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে। তবে অধিকতর তদন্তে রহস্য উদঘাটন হবে।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শ্যামল মিয়া জানিয়েছেন, পুলিশ সুপার তদন্ত করে যাওয়ার পর তিনি হোটেলের ছয়তলার চিলেকোঠার ছাদে গিয়ে নেশা জাতীয় কিছু উপকরণের সন্ধান পেয়েছেন। তাঁর ধারণা, ওই ছাদে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এনামুলকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের হেফাজতে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার বক্তব্য রেকর্ডও করা হয়েছে। তবে এখনই তার বক্তব্য প্রকাশ করা ঠিক হবে না। এনামুল এবং শান্ত বর্তমানে কারাগারে আছে।’
রকির বাবা শাহাবুদ্দিন এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন। গাঙচিল রেস্তোরাঁর মালিক আবু সাঈদ বলেছেন, তিনিও চান প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হোক, প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক।
মন্তব্য করুন