ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন ক্যাম্পাসে ফিরে নতুন হলে উঠেছেন। হলে ওঠার সময় আগামীকাল সোমবার থেকে পুনরায় ক্লাস শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন ফুলপরী।

গ্রামের বাড়ি পাবনা থেকে আজ রোববার বেলা ১২টায় বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে আসেন ফুলপরী। পরে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে নির্ধারিত কক্ষে ওঠেন ওই শিক্ষার্থী।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে গত ৪ মার্চ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আসন বরাদ্দ পেতে আবেদন করেন ফুলপরী। পরে ফুলপরীর পছন্দ অনুযায়ী তাকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আসন বরাদ্দ দেয় প্রশাসন।

এর আগে ফুলপরী দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে সংযুক্ত ছিলেন।

ফুলপরী বলেন, আমার মধ্যে ক্যাম্পাসের প্রথমদিনের মতো অনুভূতি কাজ করছে। কোনো ভয়ভীতি কাজ করছে না। খুব ভালো লাগছে।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল (সোমবার) থেকে ক্লাস শুরু করবো। প্রশাসনের কাছে হল ও ক্যাম্পাসে আমার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।

বাবার সঙ্গে হলের বারান্দায় ফুলপরী

ফুলপরীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, আজ ১২টার দিকে আমরা ক্যাম্পাসে এসেছি। প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছে। আমার মেয়ে আজ থেকে হলেই থাকবে। সোমবার থেকে ক্লাস শুরু করবে।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোষ্ট অধ্যাপক মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান বলেন, আবেদনের পর সেদিনই তাকে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসে আসার পর চিফ মেডিকেল অফিসারকে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। এছাড়া তার যেন কোনো ধরণের সমস্যায় না পড়তে হয়, বিষয়টি আমরা দেখভাল করবো। আমি ওই কক্ষের অন্যদের ডেকে কথা বলেছি, যেন ওর কোনো সমস্যা না হয়।

ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি বখতিয়ার হাসান বলেন, আমরা ওই শিক্ষার্থীর বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। ক্লাসে এসে যেন কোনো ধরণের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা এবং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয় এজন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেছি।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ফুলপরীকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে সাড়ে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনি ফুলপরী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হলের প্রাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগের ৫ নেতাকর্মীকে গত ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এর আগে ১ মার্চ তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এদিকে ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ, হাউস টিউটরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ খুঁজে পায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি। এ ছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশে গত ১ মার্চ হলটির প্রাধ্যক্ষ শামসুল আলমকে প্রত্যাহার করা হয়।