সিলেট বিয়ানীবাজারের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে বুধবার ভোরে মৌসুমের প্রথম প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি ও বৈশাখী ঝড় হয়েছে। এতে উপজেলার কুড়ারবাজার, শেওলা ও দুবাগ ইউনিয়নের কমপক্ষে ২৫টি গ্রামের ফসল ও গাছপালা তছনছ হয়ে গেছে। শিলার আঘাতে মারা পড়েছে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

স্থানীয়রা জানান, বুধবার ভোর ৬টার দিকে উপজেলার কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী কুড়ারবাজার ইউনিয়নের দেউলগ্রাম, গোবিন্দ্রশ্রী, আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর, আঙ্গুরা, লামলিগ্রাম, আকাখাজানা, বৈরাগীবাজার, আঙ্গারজুর, শেওলা ইউনিয়নের শালেশ্বর, কাকরদিয়া, ঘড়ুয়া, দুবাগ ইউনিয়নের মেওয়া, দুবাগ, দক্ষিণ দুবাগ, চরিয়া এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলার বুধবারি বাজার ইউনিয়নের বহরগ্রাম, বাণিগ্রাম, ঘাঘুয়াসহ বেশকিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

কাকরদিয়া এলাকার মামুনুর রশিদ (২৯) বলেন, ভোরের শিলাবৃষ্টির প্রচণ্ড শব্দে আমাদের ঘুম ভাঙে। পুরো উঠোন শিলা পড়ে সাদা হয়ে গেছে। এত বড় বড় শিলা এর আগে দেখিনি। একই এলাকার কামাল হোসেন (৪৫) বলেন, আম ও কাঁঠাল গাছের ফলহানির সঙ্গে বোরো ধানেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, গাছে থাকা পাখির বাসা ভেঙে পড়ে। বেশ কয়েকটি পাখি মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

আঙ্গুরা মোহাম্মদপুর এলাকার মাহমুদ আলী (৬৫) বলেন, ১৯৯১ সালে এরকম শিল (শিলাবৃষ্টি) দেখেছিলাম। ৩০ বছর পর আবার দেখলাম। তিনি বলেন, শিলের শব্দে মনে হয়েছিলো টিনের চাল যেন ভেঙে পড়বে।

উপজলার কুড়ারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তুতিউর রহমান তুতা বলেন, শিলাবৃষ্টিতে বেশ কিছু ঘরের টিনের চাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে গবাদি পশু-পাখি মারা গেছে। এছাড়া বোরো ধান ও ফল ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো কেউ হতাহত হয়নি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান হেকিম নিলয় বলেন, ‘শিলাবৃষ্টিতে গবাদিপশু, পাখি, বোরো ধানসহ শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে। একই সঙ্গে আক্রান্ত এলাকার আম ও কাঁঠালের মুকুল ঝরে গেছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছি।’