বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলায় চোর সন্দেহে দিনমজুর শেখ মনিরুজ্জামানকে নির্যাতনের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে মোল্লাহাটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন– উপজেলার ঘোষগাতি এলাকার আরিফুল শেখ, আব্দুল গনি শেখ, আলমাস শেখ, নগরকান্দি এলাকার মাহমুদ শেখ ও আকাশ শেখ। 

এর আগে নির্যাতনের শিকার মনিরুজ্জামানের বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার রাতে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে মোল্লাহাট থানায় মামলা করেন।

মনিরুজ্জামান উপজেলার পূর্ব দারিয়ালা গ্রামের প্রয়াত ইসলাম শেখের ছেলে। তিনি গাংনী মাতারচর আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারের দেওয়া একটি ঘরে থাকেন। 

এর আগে মনিরুজ্জামানকে নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে গত মঙ্গলবার দিনভর নানা নাটকীয়তা চলে। মোল্লাহাট থানার ওসি সোমেন দাস ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি দাবি করে মীমাংসা হয়ে গেছে বলে জানান। প্রকাশ্যে মনিরুজ্জামানকে মারধরের ভিডিও অনেকের কাছে থাকলেও ব্যবস্থা গ্রহণে অভিযোগ প্রয়োজন বলে জানায় পুলিশ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে মনিরুজ্জামানের পরিবারকে নির্যাতনকারীরা মামলা করতে দেয়নি। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে মঙ্গলবার রাতে মনিরুজ্জামানের ভাই মামলা করেন। আসামিদের গ্রেপ্তার নিয়েও নাটকের কমতি ছিল না। সকালে গ্রেপ্তারদের নাম পেতে সংবাদকর্মীদের অপেক্ষা করতে হয় প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা।

গত ১১ মার্চ উপজেলা পশু হাসপাতালে ছাগলের চিকিৎসা করে বাড়ি ফেরার সময় ঘোষগাতি এলাকায় চোর সন্দেহে মনিরুজ্জামানকে রড ও লাঠি দিয়ে মেরে আহত করে কিছু লোক। নির্যাতনকারীরা মারধর ও মনিরুজ্জামানের চিৎকারের ভিডিও ধারণ করে। এরপর নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আহত ওই দিনমজুরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী আশরাফুল আলম বলেন, দিনমজুরকে নির্যাতনের মামলায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।