- সারাদেশ
- শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান
শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান
অভিযুক্ত বললেন, কঞ্চি দিয়ে মেরেছি

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার বীরেন্দ্র কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের এ ঘটনা সোমবার ঘটলেও জানাজানি হয়েছে বৃহস্পতিবার। অভিযুক্ত তোফাজ্জল হোসেন উপজেলার গুমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, গত ১৩ মার্চ সপ্তম শ্রেণির প্রথম ঘণ্টার ইংরেজি ক্লাস নিচ্ছিলেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার। হঠাৎ পেছনের দরজা দিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য তোফাজ্জল। তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এতে ছাত্রছাত্রীরা কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারায় ক্ষিপ্ত হন চেয়ারম্যান। এরপর তিনি শিক্ষিকাকে বেত নিয়ে আসতে বলেন। পরে বাইরে থেকে বাঁশের কঞ্চি এনে শিক্ষার্থীদের গণহারে পেটান এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন তিনি। অন্তত ২০ শিক্ষার্থী পিটুনির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সহকারী শিক্ষক শারমিন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী খাদিজা আক্তার মুন্নি বলে, চেয়ারম্যান স্যার পেছন দিয়ে হঠাৎ এসেই নানা প্রশ্ন করায় আমরা আতঙ্কিত হই। এ কারণে কোনো জবাব দিতে পারিনি। তাই তিনি আমাদের পিটিয়েছেন। শিক্ষার্থী চনিতা ত্রিপুরাও একই অভিযোগ করে চেয়ারম্যানের বিচারের দাবি জানিয়েছে।
জাহিদা আক্তার জানায়, চেয়ারম্যান স্যার আমাদের শিক্ষক শারমিন ম্যাডামকে বেত নিয়ে আসতে বলায় ক্লাসে বেত এলাউ নয় বলে জানানো হয়। এতে চেয়ারম্যান স্যার আরও ক্ষিপ্ত হন এবং বেত আনতে বাধ্য করেন। তিনি আমাদের অমানবিকভাবে পিটিয়েছেন। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা জানান, ঘটনার দিন বিকেলে তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তাৎক্ষণিক তিনি পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে অবহিত করেন। তাঁরাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। তবে এতে শিক্ষকরা বিব্রত।
ঘটনার তিন দিন পর আজ দুপুরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মাটিরাঙ্গা পৌর মেয়র সামছুল হক বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। তিনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, বিষয়টি ন্যক্কারজনক। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া শ্রেণিকক্ষে বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।
ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল বলেন, বিষয়টি খুবই তুচ্ছ। এর পরও কেন একে এত বড় করা হলো, বুঝতে পারছি না। আমি চিকন একটি কঞ্চি দিয়ে মেরেছি। এ জন্য আমি ব্যথিত এবং ভুলের জন ক্ষমাপ্রার্থী।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী বলেন, কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে তথ্য পাওয়ার পর খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকও অবগত আছেন।
মন্তব্য করুন