ভাতা ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি ৩ থেকে ৭ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। কিন্তু ভাতার কার্ড না দেওয়ায় ঘুষের টাকা ফেরত চান নারীরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এক অন্তঃসত্ত্বাকে কিল-ঘুসি মারার ঘটনা ঘটেছে। ধনবাড়ী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রধান সহকারী আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার দুপুরে অফিসকক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

আহত নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আব্দুর রশিদকে অফিসকক্ষেই অবরোধ করে রাখেন ভুক্তভোগীরা। খবর পেয়ে অভিযুক্তকে হেফাজতে নেয় ধনবাড়ী থানা পুলিশ।

ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার লাভলী ধোপাখালী ইউনিয়নের বিলপাড়া এলাকার মোবারক হোসেনের স্ত্রী। ঘটনাটি গতকাল বৃহস্পতিবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘আমাকে অন্তঃসত্ত্বা কার্ড দেওয়ার কথা বলে একই ইউনিয়নের নরিল্যা গ্রামের মিনা আক্তারের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা নেন। এ ছাড়া আব্দুর রশিদ অন্তঃসত্ত্বা, শিশু ভাতা, চালের কার্ড ও ঘর দেবেন বলে জানান।’

তাঁর দাবি, নরিল্যা শাহপাড়া এলাকার প্রায় ৩০-৩৫ জন নারীর কাছ থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা তুলে আব্দুর রশিদকে দেন মিনা আক্তার। কিন্তু কার্ড চাইতে গেলে কালক্ষেপণ করেন। বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগীরা ওই অফিস ঘেরা করেন। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে (সুমাইয়া) কিল-ঘুষি মারতে থাকেন আব্দুর রশিদ। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় নরিল্যা শাহপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী রুমি আক্তার, নাসিমা বেগম, কহিনুর, শাহানাজ বেগমের সঙ্গে। তাঁরা জানান, ৩০-৩৫ জন নারীর কাছ থেকে ৩-৭ হাজার টাকা করে নিয়েছেন আব্দুর রশিদ। অন্তঃসত্ত্বা লাভলীকে মাথায় কিল-ঘুসি মেরে আহত করেছেন তিনি। অফিসটি অনিয়ম, অসদাচরণ, ঘুষ, বকশিশ ও কমিশনের আস্তানায় পরিণত হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি আসলে ওভাবে টাকা-পয়সা নিইনি। কে বা কারা আমার নাম ভাঙিয়ে টাকা-পয়সা নিয়েছে জানি না।’

জানতে চাইলে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন, এটি কোনো অফিসের আর্থিক বিষয় নয়। এটি তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।

ধনবাড়ী থানার ওসি এইচএম জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আব্দুর রশিদকে পুলিশি হেফাজতে নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।