- সারাদেশ
- এক প্রার্থীকে নিজেদের নেতা দাবি আ’লীগ ও বিএনপির
কোটালীপাড়া পৌর নির্বাচন
এক প্রার্থীকে নিজেদের নেতা দাবি আ’লীগ ও বিএনপির

কোটালীপাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী এলাকা ও আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। আগামী ২০ মার্চ এ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দলটির মনোনীত মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমান হাজরা ইতোমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ভোট হবে শুধু কাউন্সিলর পদে।
এর মধ্যে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দুই ‘বিএনপি নেতা’ ভোট যুদ্ধে নেমে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। দুই প্রার্থী হলেন– বর্তমান কাউন্সিলর পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ওলিউর রহমান হাওলাদার ও সহদপ্তর সম্পাদক মো. কামাল হোসেন দাড়িয়া। যদিও কামালকে দুই দলই নিজেদের নেতা বলে দাবি করছে।
২০০৩ সালে পৌর বিএনপির কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক হন কামাল। তবে তিনি পদত্যাগ করেননি। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র দেখিয়ে নিজেকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করছেন। ওলিউরকে বিএনপির বলে প্রচার করছেন তিনি। পৌরসভাটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর বিগত চারটি নির্বাচনে ওলিউর কাউন্সিলর হয়েছেন। এবার পঞ্চমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন হাজরা বলেন, ‘কামাল বিএনপি করত কিনা জানি না। আওয়ামী লীগের সদস্য ছিল কিনা তাও জানি না। করোনার সময় দলের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করায় তাঁকে দেওয়া প্রত্যয়নপত্রে আমি স্বাক্ষর করেছি।’
৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই সিকদার বলেন, ২০১২ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হলে সাধারণ সম্পাদক হন মো. নান্নু মোল্লা। এর পর তিনি এলাকা ত্যাগ করেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে কামালকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে আওয়ামী লীগ তাঁকে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছে। সে হিসেবে তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এটি গঠনতন্ত্র অনুসারে হয়েছে কিনা জানা নেই তাঁর।
পৌর বিএনপির ২০০৩ সালের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাকিম খলিফা বলেন, ‘কামাল আমাদের কমিটিতে সহদপ্তর সম্পাদক ছিলেন। একসঙ্গে বিএনপি করেছি।’ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার হাওলাদার বলেন, কামাল পদত্যাগ করেননি। আওয়ামী লীগের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে নির্বাচনে ফায়দা লুটতে তিনি এটি ব্যবহার করছেন।
ভোটার মো. শওকত খান বলেন, কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগের কর্মীর অভাব নেই। তারপরও কেন বিএনপি নেতাকে প্রত্যয়নপত্র দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা বানানো হলো, এটি বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর ওলিউর রহমান হাওলাদার বলেন, বিগত চার নির্বাচনে ভোটাররা তাঁকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছেন। এবারও বিজয় সুনিশ্চিত দেখে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কৌশল হিসেবে বিএনপি নেতা বলে প্রচার করছেন। আগে বিএনপি করলেও এখন কোনো দলের নন। কামাল বিএনপি করেছেন। এখন আওয়ামী লীগের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে নেতা সেজেছেন।
তবে কামাল হোসেন দাড়িয়া বলেন, ‘গত নির্বাচনে আমি ওলিউরের কাছে সামান্য ভোটে হেরেছি। তারপর স্থানীয়রা আমাকে আওয়ামী লীগে থাকার পরামর্শ দেন। তাই প্রত্যয়নপত্র নিয়েছি। এবার সাধারণ মানুষ আমার পক্ষে। আগে কোনো দলের সঙ্গে ছিলাম না। প্রতিপক্ষ আমাকে ঘায়েল করতে আওয়ামী লীগের দুর্গে বিএনপি নেতা হিসেবে প্রচার করছে।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ফয়জুল মোল্লা বলেন, নির্বাচনের প্রচার শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। শেষ পর্যন্ত পৌরসভায় শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ হবে বলে আশা করেন তিনি।
মন্তব্য করুন